দীর্ঘ ৪৩ বছরের অফিস ছেড়ে নতুন ঠিকানায় যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী রবিবার থেকে ইসির নিজস্ব কার্যালয় আগারগাঁওয়ের ‘নির্বাচন ভবনে’ অফিস করবেন বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা। বিদায়ের আগে দুই সপ্তাহ নতুন ভবনে অফিস করার সুযোগ পাবেন বিদায়ী ইসি। এরপরে ফেব্রুয়ারিতে আসবে নতুন নির্বাচন কমিশন। নতুন ভবনে হবে নতুন ইসির যাত্রা। শুরু হবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি ইসির নতুন ভবনের উদ্বোধন করেছেন।
গতকাল শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে নির্বাচন কমিশনের পুরনো কার্যালয়ে শেষ অফিস করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা। পুরনো ভবনে গতকাল শেষ কর্মদিবসে নিজেদের কাগজপত্র গোছানোর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিনের স্মৃতি জড়ানো পুরনো অফিসে ছবি তুলতেও দেখা গেছে অনেক কর্মকর্তাকে। কান্না জড়িত কণ্ঠে অনেক কর্মকর্তা তাদের দীর্ঘদিনের স্মৃতিও বর্ণনা করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন কর্মকর্তা লিখেছেন—‘প্ল্যানিং কমিশনে ইসির অফিস ছিল আমার প্রিয় অফিস ক্যাম্পাস। স্মৃতিবিজড়িত এ ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার শেষ অফিস করলাম। রাজনীতিবিদসহ অনেক সাংবাদিকেরও স্মৃতিবিজড়িত এ ক্যাম্পাস। নির্বাচন কমিশনের অফিস তার নতুন ঠিকানায় যাবে। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৃহস্পতিবার (গতকাল) ইসির পুরনো ভবনে আমরা শেষ অফিস করেছি। রবিবার থেকে নতুন ভবনে অফিস শুরু হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজকালের মধ্যে সবকিছু নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হবে। ২২ জানুয়ারি থেকে সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আমরা নির্বাচন ভবনে অফিস করব। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে বতর্মান ইসির মেয়াদ শেষ। নতুন ইসি গঠন নিয়ে সংলাপ করেছেন রাষ্ট্রপতি। নতুন ইসির যাত্রা শুরু হবে ‘নির্বাচন ভবনেই’। জানা গেছে, বর্তমান কমিশনের ‘তাড়াহুড়ো’র মধ্যেই সাম্প্রতিক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ইসির নিজস্ব বহুতল ভবন উদ্বোধন করা হয়। নির্বাচন ভবন ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নিয়ে নবনির্মিত ভবনের কাজ এ বছরের জুনের মধ্যেই শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু বিদায়ী ইসির তাগিদের মধ্যে এ মাসেই নতুন ভবন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। বিদায়ী ইসির কারণে ‘তাড়াহুড়ো’ করতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইসির কর্মকর্তারা বলেন, কারিগরি সব কাজ নির্ধারিত সময়ের মধে?্য শেষ হয়েছে। কোনো তাড়াহুড়ো নয়, আমরা সবকিছু ইতিবাচকভাবে দেখছি। এত দিন নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কোনো অফিস ভবন ছিল না। পরিকল্পনা কমিশনের চত্বরে দুটি ব্লকে নির্বাচন কমিশনের অফিস ছিল। ২০০৭ সালে পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ২ একর ৩৬ শতাংশ জমি নির্বাচন কমিশনকে বরাদ্দ দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ণ মন্ত্রণালয়। ইলেকশন রিসোর্স সেন্টার (ইআরসি) নামে প্রকল্পে ইসির নিজস্ব ভবন দুটি অংশে নির্মিত হয়েছে, যার একটি অংশ ১২ তলাবিশিষ্ট নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবন। এ ভবনটি এরই মধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে।