শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের অর্জিত জ্ঞান জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহার করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে এমন ধরনের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা জাতীয় জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তা কাজে লাগাতে পারে। তিনি বলেন, জ্ঞান ও মেধার প্রয়োগে সৃজনশীলতা ও উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের কোন সীমা নেই। জীবনভর তা আয়ত্ত করে আরো বড় সাফল্য অর্জন সম্ভব।
শিক্ষামন্ত্রী আজ রাজধানীর সাতারকুলে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)-এর চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। সমাবর্তনে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান, ইউআইইউ-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রেজওয়ান খান এবং বোর্ড অভ্ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা বক্তৃতা করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী। ২০২১ সালের মধ্যে অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চাই। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব সমাজে স্থান পেতে চাই। দারিদ্র্য দূরীকরণ এখনও আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দারিদ্র্য দূরীকরণে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। নারীশিক্ষায় আমরা সার্কভূক্ত সব দেশের চেয়ে এগিয়ে আছি। আমরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন করেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্রী হার ৫১ শতাংশ ও ছাত্র হার ৪৯ শতাংশ। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রী হার ৫৩ শতাংশ ও ছাত্র হার ৪৭ শতাংশ। আগামী ৩ বছরের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ও ৬ বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জনে আমরা সক্ষম হবো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনি একদল স্বাধীনতাবিরোধী এ উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করার জন্য ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে তাদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের কুমন্ত্রণায় প্ররোচিত হয়ে বেশকিছু তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে বিপথগামী হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উচ্চ শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বহুমাত্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে শিক্ষার্থীদেরকে সম্পৃক্ত করার যথোপযুক্ত পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থাকতে হবে। বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও তথ্য বিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করে তাঁদেরকে যুগোপযোগী মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। তিনি দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সকল প্রকার ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানান। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা মেনে স্থায়ী নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপন করায় তিনি ইউআইইউ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
সমাবর্তনে ১৬১০ জন শিক্ষার্থীকে ¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৬ জন শিক্ষার্থীকে পদক প্রদান করেন।