সাক্ষরতা অর্জন করি ডিজিটাল বিশ্ব গড়ি

সার্বিক উন্নয়নে সাক্ষরতার বিকল্প নেই। সাক্ষরতার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের দ্বার উন্মুক্ত হয় যা জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে। সাক্ষরতা ও দক্ষতা সম্পন্ন মানুষই একটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদ। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম।
আজ আর্ন্তজাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০১৭ উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ, দেশের বিদ্যমান ২৮ শতাংশ নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষর ও দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করার জন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সাক্ষরতা ও দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদের প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আশা করা যায় বাংলাদেশ ২০২১ সালের পূর্বেই মধ্যমআয়ের দেশে উন্নীত হবে।
মন্ত্রী মোস্তাফিজুর বলেন, স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রাথমিক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি চৎরসধৎু ঝপযড়ড়ষং (ঞধশরহম ঙাবৎ) অপঃ, ১৯৭৪ পাশ করে ৩৬ হাজার ৬১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। আর ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন এবং সাথে সাথে ৯১ হাজার জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেন ।
মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীর সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে হলে আগামী প্রজন্মকে হতে হবে সাক্ষর এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন। বর্তমান সরকার শিক্ষার প্রসার ও নিরক্ষরতামুক্ত এবং তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, উপবৃত্তি কার্যক্রমসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে সরকার নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচিকে একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালাতে হবে।
এর আগে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০১৭ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি জাতীয় শহিদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। র‌্যালির নেতৃত্ব দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
আর্ন্তজাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০১৭ উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক বাসুদেব গাঙ্গুলী এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কো ঢাকার প্রতিনিধি ঝঁহ খবর। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ ইউনিট, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, দাতা সংস্থা, ইউনেস্কো ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জাতীয়