প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গৃহীত সকল উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সামনের সারিতে রয়েছে বাংলাদেশের যুবসমাজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে বিপুল সংখ্যক যুব জনসংখ্যা। এজেন্ডা ২০৩০ কে সামনে রেখে এই বিপুল যুব জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ পরবর্তী দশকগুলোতে জনমিতিক লভ্যাংশ উঠিয়ে আনতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন সিকদার ৩০ জানুয়ারি জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (ঊঈঙঝঙঈ) আয়োজিত ৭ম ইকোসক ইয়ুথ ফোরামে বক্তৃতাকালে একথা বলেন।
বীরেন সিকদার বলেন, সামাজিকভাবে এবং ব্যক্তিপর্যায়ে যুবদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সরকার ডিজিটিাল বাংলাদেশ কর্মসূচির আওতায় যুবদের জ্ঞান, উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষভাবে জোর দিয়েছে। আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ও উদ্ভাবনীমূলক কর্মসংস্থান যেমন মোবাইল ব্যাংকিং, ই-কর্মাস ও আউট সোর্সিং কে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের যুবরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তিগত বৈষম্য কাটিয়ে উঠছে।
মন্ত্রী বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এসডিজির ৮ দশমিক ৬ অর্জনে লিড মিনিস্ট্রি হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণবিহীন যুবসংখ্যার হার বর্তমানের ২৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশে কমিয়ে আনা।
যুবসংগঠন ও সংস্থাগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব বিনির্মাণে তিনি এ ফোরামে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে : স্বল্পোন্নোত দেশসমূহকে উন্নত দেশগুলোর প্রয়োজনীয় কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলো এসডিজি’র যুব সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যসমূহ অর্জন করতে পারে; যুব উন্নয়নকে ফোকাস করে উত্তর-দক্ষিণ, দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ট্রায়াঙ্গুলার পার্টনারশিপসমূহকে আরো বেশি উন্মোচন করা; দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক জ্ঞান, প্রযুক্তি এবং দক্ষতা বিনিময় করতে হবে, যাতে যুবদের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও ব্যবধানগুলো কমে আসে এবং যুবরা পরস্পরের কাছাকাছি আসার মাধ্যমে বৈশ্বিক যুব সম্প্রদায় গড়ে তুলতে পারে। জাতিসংঘের সংস্থাসমূহের সদস্য দেশগুলোর সাথে আরো বেশি অংশীদারিত্ব বজায় রেখে বেশি বেশি যুব উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা, যাতে এসডিজি’র আলোকে যুব ক্ষমতায়ন ত্বরান্বিত হয় এবং বিভিন্ন দেশের যুব আন্দোলনকে উচ্চশিক্ষা, জ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া এবং উৎসাহিত ও যুক্ত করা যায়।
ইয়ুথ ফোরামের মূল প্রতিপাদ্য, ‘টেকসই ও সক্ষমতাপূর্ণ নগর ও গ্রাম সম্প্রদায় গড়ে তুলতে যুবদের ভূমিকা’। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি গরৎড়ংষধা খধলčপ্সশ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের সভাপতি গধৎরব ঈযধঃধৎফড়াপ্স সভায় বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক ফোরাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩৪ জন মন্ত্রী, ৫২ জন সরকারি প্রতিনিধি এবং ৭শ’ জন যুব সংগঠনের প্রতিনিধি এ ফোরামে অংশগ্রহণ করছেন।
একই দিনে প্রতিমন্ত্রী নেপালের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। এসময় দু’দেশের যুব সমাজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বিশেষ করে ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে যুবদের জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বিষয়সহ দু’দেশের মধ্যে ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ণড়ঁঃয ঊীপযধহমব চৎড়মৎধসসব সম্পর্কিত একটি গঙট এর সম্ভাব্যতা নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া, তিনি জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিবের যুব বিষয়ক বিশেষদূত ঔধুধঃযসধ ডরপশৎধসধহধুধশব এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।