ইন্দোনেশিয়ার জাভা সাগরে ১৮৯ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত বিমানের কেউ হয়তো আর বেঁচে নেই। তবে এ বিমানটির দুর্ঘটনার পর যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তা হলো-বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ ব্র্যান্ডের এ বিমানটি ছিলো একেবারেই নতুন বা ব্র্যান্ড নিউ।
একটি নতুন বিমান কীভাবে হঠাৎ বিধস্ত হলো সে কারণ অনুসন্ধানে এখন ব্যস্ত বিশেষজ্ঞরা। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা হয়েছে যদিও দুর্ঘটনার বিস্তারিত কারণ এখনো জানা যায়নি এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
সাধারণত বিমান দুর্ঘটনার জন্য দুটি বিষয়ই কাজ করে- প্রযুক্তিগত কিংবা মানুষের ভুল। বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ ব্র্যান্ডের বিমানের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। আর যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটি কার্যক্রম শুরু করেছে গত ১৫ আগস্ট থেকে।
বাজেট এয়ার হিসেবে পরিচিত লায়ন এয়ার জুলাইয়ে ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছিলো যে, ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম তারা এ ধরনের বিমানের অপারেশন শুরু করতে যাচ্ছে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি কমিশনের প্রধান সোয়েরজানতো টাহজানো বলেন, বিমানটি মাত্র আটশ ঘণ্টা উড্ডয়ন করেছিল। দুর্ঘটনায় পড়ার আগে জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পরপরই পাইলট জাকার্তায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। ফলে মনে করা হচ্ছে যে টেকনিক্যাল বা প্রযুক্তিগত কারণেই বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছে কি-না যা উড্ডয়নের পরপরই পাইলট বুঝতে পেরেছিলেন।
তবে একটি টেকনিক্যাল লগে দেখা যাচ্ছে, বাতাসের গতি বোঝার যে যন্ত্র সেটি হয়তো কাজ করছিল না। যদিও লায়ন এয়ার এ ধরনের রিপোর্ট সত্যি কি-না তা এখনো বলেনি।
তবে একজন কর্মকর্তা বলেন, লায়ন এয়ার একই মডেলের ১১টি এয়ারক্রাফট পরিচালনা করছে। যদিও এখনই এসব বিমানের কার্যক্রম বন্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
এভিয়েশন বিশ্লেষক গেরি সোয়েজাতম্যান বিবিসিকে বলেন, সাধারণত পুরনো বিমানে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। একেবারেই নতুন হলে কিছু সমস্যা চিহ্নিত হয় নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে। সেগুলো প্রথম তিনমাসের মধ্যেই সমাধান করা হয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়া বিমানটির তিন মাস অতিবাহিত হতো।
সোয়েজাতম্যান বলেন, প্রযুক্তিগত সমস্যাই হয়তো একটা কারণ হবে তবে সেটি নিশ্চিত হতে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বোয়িং কোম্পানি বলছে, ৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের বিমানগুলোই ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে বিক্রি হয়েছে যার অর্ডারের পরিমাণ প্রায় চার হাজার সাতশ। একই সিরিজের বিমান বানানোর অর্ডার আছে আমেরিকান এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, নরওয়েজিয়ান এবং ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের।