জাতীয় স্মৃতিসৌধ (সাভার) থেকে:কাকলী আক্তার:
মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে জাতির পক্ষ থেকে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটের দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রথমে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদদের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
শহীদ বেদিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
দলীয় নেতাদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনামন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও সরকার দলীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সরকার দলীয় শীর্ষ নেতাদের শ্রদ্ধা জানানোর পর সকাল ৭টায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় পার্টিও। দলটির সিনিয়র নেতারা কেউ না আসলেও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী।যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে শমসের মবিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারার সহ সভাপতি মাহমুদা চৌধুরী ,কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম বুলু, রফিকুল ইসলাম মি.ঢাকা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া জনস্বার্থ বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান সুমন,মো: ইব্রাহিম হাসান মিঠু।
শ্রদ্ধা জানায় জাসদ, বাসদ, ন্যাপ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাকের পার্টি, গণআজাদী লীগ, সাম্যবাদী দল; এনডিপি, ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রমৈত্রী, যুবমৈত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পর শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসনসহ বেশকটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় এদিনে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের এ পর্বে আসেন নানা বয়সের, নানা পেশার মানুষ।
সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুটি যেমন এসেছিল বাবার হাত ধরে, তেমনি করে অতিশীতিপর কজন প্রৌঢ়ার দেখা মিলেছে বিজয় দিনের ভোরে। ইতিহাসের স্বাক্ষী এই নারীরা চলৎশক্তিহীন হলেও এসেছিলেন হুইল চেয়ারে করে।
মূল বেদি অবধি তাদের শ্রদ্ধার ফুল পৌঁছে যায় অন্য প্রজন্মের হাত ছুঁয়ে, যাদের হাত ধরে আবর্তিত হবে আগামীর গতিপথ।