মোস্তফা কাজল
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিচ্ছিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। এসব ঘটনায় দু-একজনের প্রাণহানি ও শতাধিক লোকের আহত হবার সম্ভাবনা আছে। বিএনপি জোটে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। এছাড়া বিএনপি থেকে একাধিক নেতার আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারে বলে মনে করছেন জোতিষবিদগণ। গতকাল জ্যোতিষ লিটন দেওয়ান চিশতি, ড. কে সি পাল ও ড. রাম প্রসাদ ভট্টাচার্যের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য। তারা বলছেন, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও জনপ্রিয়তার বলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই শতাধিক আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবেন তিনি।
এছাড়া জোতিষশাস্ত্র মতে, গ্রহের প্রভাবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কিছুটা সংঘাতপূর্ণ। ফলশ্রুতিতে নির্বাচন পরবর্তী কিছুদিন যাবে বিক্ষোভ ও আন্দোলন নিয়ে। সরকার এসব ভালোভাবে দমন করে সবার প্রশংসা অর্জন করবে। জ্যোতিষীরা আরও বলছেন, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে রাজনৈতিক অস্থিরতা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০১৯ সালের প্রথম দিকে আইনি প্রক্রিয়ায় জামিন লাভ করতে পারবেন। পরে আন্দোলনের নতুন ডাক দিতে পারেন। জ্যোতিষীদের মতে, ২০১৯ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য সফলতার বছর। ব্যবসা ও শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বছরের মাঝামাঝি ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টিতে প্রাণ ও শস্যহানির আশঙ্কা রয়েছে। তবে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। আমদানি বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া বিএনপি জোটের কিছু শরিক দলের নেতাদের দল ভাঙার কারণে এ জোট কিছুটা ক্ষতির মুখেও পড়তে পারে। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত কিছুটা সহিংস রূপ নিতে পারে। পরে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। দেশের সার্বিক উন্নতি বিগত বছরের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পাবে। ফলে বিদেশে সরকারের সুনাম ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে যাবে। বিদেশি দাতা ও সাহায্য সংস্থাগুলো সহযোগিতা বাড়িয়ে দেবে।
লিটন দেওয়ান চিশতি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট একাদশ সংসদ নির্বাচনে আড়াই’শ আসনে বিজয়ী হবে। পাশাপাশি নতুন বছরের শুরুতে সরকার গঠন করবে। নতুন সরকারে কয়েকজন নতুন মুখ দেখা যাবার সম্ভাবনা আছে। নতুন সরকার নতুন নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন করে জনগণের মনে আস্থার সৃষ্টি করবেন। এদিকে বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংস এবং হামলার ঘটনা সফলভাবে মোকাবিলা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে শেষ করতে পারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়বে। চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের দিকে এগোবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হতে পারে। দাতাসংস্থার সঙ্গে সরকারের বিদ্যমান সম্পর্ক নতুন দিগন্তের পথ দেখাবে। পাশাপাশি কূটনৈতিক সফলতাও বাড়বে। জ্যোতিষ ড. কে সি পাল বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও দুর্নীতি দমনে কর্মসূচি প্রণয়ন করবেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট সম্মিলিতভাবে কমপক্ষে ২২০-২৩০ আসনে বিজয়ী হবে। অপর দিকে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ৭০ থেকে ৭৫ আসন পেতে পারে। এ নির্বাচন সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এতে নির্বাচন কমিশনের সুনাম দেশে বিদেশে বেড়ে যাবে। এছাড়া ২০১৯ সালের শুরুতে নতুন সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ। নতুন বছর ২০১৯ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন ও কর্মসূচি সফল হবে না। বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে হরতালসহ নানান কর্মসূচি দিলেও সাধারণ মানুষ এতে আশাব্যঞ্জক সাড়া দেবে না। নতুন বছরের বেশির ভাগ সময় দেশে বিরাজ করবে আন্দোলনের পরিবেশ। ড. রাম প্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সফলতার পরিচয় দিবে। ফলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি সব মহলের আস্থা আরও বাড়বে। এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ বৃহত্তর জোট গঠনে সক্রিয় হবে। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের টানাপড়েন বাড়বে বলে ড. রাম প্রসাদ মনে করছেন।