বিল গেটসের মতে কোটিপতি হওয়ার উপায়

বিল গেটসকে চিনেন না এমন মানুষ এই পৃথিবীতে খুব কমই আছে। যুক্তরাষ্টের ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের সব চেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় তিনি ছিলেন। গত ২২ বছরে টানা ১৭ বার বিল গেটসের নাম ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষে ছিল। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন টেকজায়ান্ট প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। তিনি পার্সোনাল কম্পিউটার বপ্লবেরও একজন পথিকৃত্‍। তার বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ৯০ বিলিয়ন ডলার। আজকে জেনে নিন , তার জীবনে সাফল্য লাভের ক্ষেত্রে ১০ টি পরামর্শ।
তাড়াতাড়ি শুরু করুন : এমন অনেকেই পাবেন যারা জিবনে কিছু করব করব ভেবে কিছুই করেনি। শেষ পড়ন্ত বুড়ো বয়সে ‘ কী না করতে পারতাম’। এই আফসোস নিয়েই শেষ জিবনটা কাটিয়ে দেয়। তাই বিল গেটস সব সময় বলেছেন ,’ তাড়া তাড়ি শুরু করুন’। বিল গেটসের বয়স যখন ১৩ তখন তিনি কম্পিউটার নিয়ে কাজ শুরু করেন। জিবনে যত দ্রুত কাজ শুরু করবেন , তত দ্রুত বাড়বে কাজের পরিধি। তরুন বয়সে মানুষ নিজের সপ্ন নিয়ে সব চেয়ে বেশি শক্ত অবস্থানে থাকে। আবার এই বয়সেই তারা অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। ছাত্র জীবন থেকেই যদি স্বপ্ন পূরন শুরু হয়। তবে আপনার সফলতার সম্ভাবনা যতটুকুই থাক না কেন , অন্তত হাল ছেড়ে যাওয়ার আশংঙ্কা খুবই কম থাকবে।

দূরদৃষ্টি ও মনের জোর থাকতে হবে : নিজের লক্ষ্যের ব্যাপারে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। মাইক্রোসফট আজ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান হলেও , শুরুর দিকের গল্পটা কিন্তু এমন ছিল না। মাইক্রোসফট শুরু করার সময় যেসব বন্ধু নিয়োগ দিয়েছিলেন, তাদের মাসিক বেতন কোথা থেকে আসবে, সেটা নিয়েই বিল গেটসকে বিচলিত থাকতে হত। একটু এদিক ওদিক হলেই তাদের দেউলিয়া হয়ে যাবার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তিনি মাইক্রোসফটের ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কারন তার খুবই স্বতন্ত্র কিছু দক্ষতা ছিল, যা তাকে এত বড় ঝুকি নিতে সাহায্য করছিল। যে কোন ব্যবসার শুরুর দিকেই প্রচন্ড ঝড় সহ্য করতে হয়। তাই বিল গেটসের মতে সফল হতে হলে এক জনের নিজের লক্ষ্যের ব্যাপারে দূরদৃষ্টি থাকা আবশ্যক। সেই সাথে তাকে খুবই শক্ত মানষিকতার অধিকারি হতে হবে।

না বলা শিখুন : আপনি যতই প্রতিভাবান হোন না কেন , দিনে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আপনি পাচ্ছেন না। এই ২৪ ঘন্টা কে কিভাবে ব্যবহার করে , সেটাই সফল ও অসফল মানুষের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। হার্ভাড ইউনিভার্সিটির এক বক্তব্যে এক বার বিল গেটস বলেছিলেন – জিবনের সেরা উপদেশ আমি পেয়েছি আমার বন্ধু ওয়ারেন বাফেটের কাছ থেকে। সে বলছিল, আপনাকে ‘না’ বলতে জানতে হবে। বিল গেটস মনে করেন, কখনও কখনও না বলতে পারা আপনার লক্ষ্যে অবিচল থাকতে সাহায্য করবে।

কঠোর পরিশ্রম : যে কোন বড় সাফল্যের পিছনেই থাকে কঠোর পরিশ্রমের গল্প। মাইক্রোসফটের শুরুর দিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কঠোর পরিশ্রম করেছেন বিল গেটস। সে সময় বছরে মাত্র ২ সপ্তাহ তিনি ব্যয় করতেন বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। আর সেই ২ সপ্তাহ তিনি ব্যয় করতেন বই পড়া ও ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তার কাজে। সেই ২ সপ্তাহের ভিতরেই তিনি কাস্টমারদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ফিড ব্যাক নিতেন। জানতেন , তার প্রতিষ্ঠন সঠিক পথে এগুচ্ছে কিনা। তাই বলাই যায় , সাফল্য অর্জনে কঠোর পরিশ্রমের কোন বিকল্প নাই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতেই হবে।পৃথিবীর সব সফল্যের পিছনে আছে সফলতার গল্প। বিল গেটসও তার ব্যতিক্রম নন।

নিজের কাজ উপভোগ করুন : সফল হতে হলে আপনার অবশ্যই নিজের কাজকে ভালোবাসতে হবে। তবেই নিজের কাজকে উপভোগ করতে পারবেন। বিল গেটসের মতে , স্মার্ট মানুষদের সঙ্গে কাজ করা , সাফল্য নিয়ে চিন্তা করা খুবই উপভোগ্য একটি ব্যাপার। আর আপনি নিজের কাজকে যদি উপভোগই করতে না পারেন , তবে আপনি কাজকে ভালোবাসতে পারবেন না। আর কাজকে ভালোবাসতে না পারলে সফল হওয়া মোটামুটি অসম্ভ। তাই কাজকে ভালোবাসুন, নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন।

জিবনটা সহজ নয়, এটি মেনে নিন : মাথায় রাখবেন ফেয়ার ফাইট কথাটা কল্পকাহিনীর বেলায় খাটে , কিন্তু তা বাস্তবে প্রযোজ্য নয়। দুনিয়ার সবাই সমান আর ন্যায্য সুযোগ পায় না। তাই মানুষিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন। আপনার প্রতিদ্বন্দিরা অনেক ক্ষেত্রেই অনেয্য সুবিধা নিয়ে এগিয়ে থাকতে চাইবেন। তার উপর যতই কঠোর পরিশ্রম করেন না কেন , এমন একটা সময় নিশ্চয়ই আসবে , যখন সব কিছু মন মত হবে না, সব কিছু নিয়ন্ত্রনে থাকবে না, পড়ে যাবেন , আপনাকে আবার দাড়াতে হবে।

যোগ্য মানুষ নিয়োগ দিন : পল অ্যালেনের সাথে পার্টনার শিপে যাওয়, স্টিভ বলমারের মত বন্ধু নিয়োগ দেয়া , তার ব্যবসা প্রসারে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছে বলে বিল গেটস মনে করেন। তিনি মনে করেন, নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিবেন, যাদের সঙ্গে আপনার কমন ভিশন আছে। যারা আপনার কাজের ব্যাপারে কমিটেড। তাদের কোন কোন দক্ষতা এবং জ্ঞান যেন আপনার থেকে ভালো হয়। যাতে কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলে তারা ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে বিবেচনা করতে পারেন। বিল গেটস মনে করেন, কোন ব্যবসায়িক সঠিক পার্টনার খুজেঁ পাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। একটি প্রতিষ্ঠানে কাস্টমারদের পরে সব চেয়ে বড় সম্পদ হল কর্মচারিরা। তাদের পরিশ্রমের ফলেই কোম্পানিটি ধীরে ধীরে সফল হতে শুরু করে। তাই নিয়োগের সময় অবশ্যই সত্‍ লোক নিয়োগ দিতে হবে।

Others আন্তর্জাতিক