বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মত আজ ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন।
একই সঙ্গে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীগণ শপথ গ্রহন করেন।
আজ বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে নতুন মন্ত্রীসভার ২৪জন মন্ত্রী, ১৯জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী শপথ গ্রহন করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর নতুন মন্ত্রীসভার সদস্যদেরকে দায়িত্ব গ্রহনের শপথ এবং গোপনীয়তার শপথ পাঠ করান। শপথ গ্রহনের পর তারা দায়িত্ব গ্রহন ও গোপনীয়তার শপথে স্বাক্ষর করেন।
আজ বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে বঙ্গভবনে শুরু হওয়া এই শপথ গ্রহন সঞ্চালনা পরিচালনা করেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিশাল বিজয় লাভ করে। নতুন মন্ত্রীসভায় ২০জন নতুন মুখ রয়েছেন।
২৪ জন মন্ত্রী হচ্ছেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
১৯ জন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ে কামাল আহমেদ মজুমদার, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ইমরান আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে নসরুল হামিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মো. জাকির হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ফরহাদ হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে স্বপন ভট্টাচার্য, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জাহিদ ফারুক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মো. মুরাদ হাসান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কে এম খালিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ডা. মো. এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মো. মাহবুব আলী এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
৩ জন উপমন্ত্রী হচ্ছেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে বেগম হাবিবুন নাহার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী।
বঙ্গভবনের জনাকীর্ণ দরবার হলে প্রধানমন্ত্রীর ছোটবোন শেখ রেহানাসহ তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ, সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, জাতীয় সংসদ সদস্যগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিনবাহিনীর প্রধানগণ, কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে হালকা আকাশি রংয়ের শাড়ি পরিহিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আস্থাশীল ও উজ্জীবিত মনে হচ্ছিল।
বিকেল তিনটা তিন মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরবার হলে প্রবেশ করার সময় সবাই দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। এর কিছু সময় পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দরবার হলে প্রবেশ করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে পদের জন্য শপথ গ্রহন করেন এবং এবং পরে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষার শপথ নেন। এরপরই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেন।
নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবন থেকে ফেরার সময় রাস্তার দু’পাশে সমবেত জনতা তাঁকে একনজর দেখার জন্য রাজধানীর রাজউক এভিনিউ ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে ছিল।