বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংসদ বর্জনের সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিকভাবে ভুল’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের প্রতি জাতীয় সংসদে যোগদানের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আজ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যারা জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে তারা জাতীয় সংসদে আসবেন এবং এখানে কথা বলবেন। আজ এটি তাদের কাছ থেকে আশা করি।’
সংসদ নেতা বলেন, যদি তারা সংসদে আসেন তাহলে তারা এখানে কথা বলার সুযোগ পাবেন।
এ সুযোগ শুধু জাতীয় সংসদে সীমাবদ্ধ থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের কার্যক্রম সংসদ টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়ায় জনগণ তাদের কথা শুনতে পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যারা কম আসন পেয়েছেন তারা অভিমান করে সংসদে আসছেন না। ‘আমি মনে করি তারা রাজনৈতিকভাবে একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ভোটের মালিক জনগণ। তারা তাদের পছন্দ মতো ভোট দেবেন এবং সেভাবেই দিয়েছেন।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে গড় তুলতে কাজ করবে। তাই নির্বাচনের আগে আমি সকল রাজনৈতিক দলকে একটি সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম যাতে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরে একটি সুন্দর পরিবেশে সে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
গত সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলের নিরঙ্কুশ বিজয় প্রসঙ্গে সংসদ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত দশ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে জনগণ তার সুফল পেয়েছে। ‘উন্নয়নের সুফল পাওয়ার কারণে তারা অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নেন যে তারা নৌকায় ভোট দেবেন এবং তারা আমাদের ভোট দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সংকল্প ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন দেশের অব্যাহত উন্নয়নও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী দিনগুলোতে একটি স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাবান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত দশ বছরের বিভিন্ন আর্থ-সমাজিক উন্নয়নসূচকে আওয়ামী লীগ সরকারের নজিরবিহীন সাফল্য বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের জনগণ বান্ধব নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের কঠোর পরিশ্রম ও সহযোগিতার কারণে। এ জন্যে আমি দেশবাসীর প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
শেখ হাসিনা সংসদকে অবহিত করেন যে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় এ পর্যন্ত মোট ৯৭টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান তাঁকে তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।