ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর সাবেক একজন সহকর্মী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈই যৌন হয়রানির অভিযোগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এর পেছনে বড় কোনো শক্তি জড়িত। তারা প্রধান বিচারপতির কার্যালয়কে নিষ্ক্রিয় করতে চায়।’ যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে রঞ্জন গগৈই বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ‘হুমকির মুখে’। এভাবে কাউকে বলির পাঁঠা বানানো যায় না।
এ বিষয়ে শনিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলে। এ মামলার রায় বিচারপতি অরুণ মিশ্র দেবেন বলে জানিয়েছেন রঞ্জন গগৈ। ২০ বছরের কেরিয়ারে তাঁকে এমন অভিযোগের মুখে পড়তে হবে, তা কখনো ভাবেননি বলে আক্ষেপ করেন প্রধান বিচারপতি। খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলও। তবে অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
Eprothom Alo
সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে সাবেক ওই সহকর্মী প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ একটি বেঞ্চে এ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শনিবার শুনানি হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি বেঞ্চ।
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা বানোয়াট এবং এটা এমন একসময়ে আনা হয়েছে, যখন আগামী সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর শুনানি হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমিই এই চেয়ারে বসব। কোনো ভীতি ছাড়াই আমার বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেহেতু কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই, তাই লোকজন কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে। আর তারা এটাই খুঁজে পেয়েছে। ২০ বছর আত্মনিবেদিত একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর আমার ব্যাংক ব্যালেন্স ৬ লাখ ৮০ হাজার রুপি। আমার চেয়ে আমার পিয়নের বেশি অর্থ আছে। ২০ বছর পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কি এটাই আমার জন্য উপহার!’
ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, যে নারী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, অতীতে তাঁর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আছে। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশি দুটি মামলা আছে।
কৌঁসুলি তুষার মেহতা বলেন, এ অভিযোগ দেখে মনে হচ্ছে, এটা প্রতারণার (ব্ল্যাকমেল) একটি পদ্ধতি। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বিশেষ বেঞ্চ কোনো রায় দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। তাঁরা এ বিষয়টিতে গণমাধ্যমকে বিচক্ষণতা প্রদর্শন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিচারপতি মিশ্র বলেছেন, এমন বিবেকবর্জিত অভিযোগ বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থাকে দুর্বল করে দেবে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভির