যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সেই বাস চালক রোকন উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়মনসিংহের ধোবাউরা থেকে তাকে গ্রেফতার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ।
নিহত ওই যাত্রীর নাম সালাউদ্দিন (৪৬)। গতকাল রবিবার ওই যাত্রীকে চলন্ত বাস থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায়।
নিহত সালাউদ্দিন ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকার মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে। তার ছোট ভাই জামাল উদ্দিন জানান, ঈদের ছুটিতে সস্ত্রীক ময়মনসিংহের ফুলপুর শ্বশুরবাড়ি থেকে গাজীপুরে কর্মস্থলে ফেরার পথে ‘আলম এশিয়া’ বাসে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।
জামাল উদ্দিনের অভিযোগ, তার ভাই সালাউদ্দিনকে বাসের লোকজন লাথি মেরে বাস থেকে ফেলে দেয় এবং তারপর চালক তার ওপর দিয়ে বাসটি চালিয়ে দেয়।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে ঢাকা-ফুলবাড়িয়া-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী আলম এশিয়া পরিবহনের একটি স্পেশাল সিটিং সার্ভিস বাসযাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। বাসের ভিতরে চালকের সহযোগীকে ‘ড্রাইভার’ পরিচয় দিয়ে সালাউদ্দিন ভাড়া কিছু কম রাখার জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রীর সঙ্গে চালকের সহযোগীর বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে তারা তাদের নির্ধারিত পুরো ভাড়াই পরিশোধ করেন। পরে ভাড়া বেশি নেওয়া নিয়ে কথা বলায় চালকের সহযোগী ‘লাথি মেরে সালাউদ্দিনকে ফেলে দেবে’ বলে হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে সালাউদ্দিন তার ভাই জামালকে টেলিফোনে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে এসে অপেক্ষা করতে বলেন। তখন জামাল ৫-৬ জন লোক নিয়ে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সালাউদ্দিনকে বাস থেকে ফেলে দেয়। এরপর সবার সামনেই চালক বাসটিকে সালাউদ্দিনের ওপর উঠিয়ে দেয়। ফলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর দ্রুতগামী বাসটিকে ফুয়াং কারখানার সামনে রেখে চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার পালিয়ে যায়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায় এবং ঘাতক বাসটি জব্দ করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।