ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সম্মেলন প্রস্তুতি চলছে। আগামী অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে ত্রিবার্ষিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ইতিমধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে এই দুই মহানগরের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের দু’জন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে দেয়া হয়েছে সমন্বয়ের দায়িত্ব। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ শাখার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১০ এপ্রিল। ২০১৬ সালের এদিনে প্রথমবারের মতো ঢাকাকে বিভক্ত করে উত্তর-দক্ষিণে ত্রিবার্ষিক কমিটি ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন দলটি। এর আগে ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল, কিন্তু তখন কোনো কমিটি হয়নি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে।
এ ক্ষেত্রে বর্তমান ও সাবেক মহানগর নেতাদের আমলনামা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। যেসব নেতার কারণে গত তিন বছরে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি এবং নতুন-পুরাতনদের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখেছেন, তাদের নতুন কমিটিতে জায়গা নাও হতে পারে। সক্রিয় ও ত্যাগীদের কমিটিতে স্থান দিতে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
প্রতিবারই জাতীয় সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবারও হবে। জাতীয় সম্মেলন ২২ ও ২৩ অক্টোবর হলে সে হিসাবে এর দু’দিন আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা। আমরা সে হিসাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, সম্মেলনে নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক। যারা ভালো করছে তারা নেতৃত্বে থাকবে। নিষ্ক্রিয়দের জায়গায় ত্যাগীরা আসবে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল কমিটি ঘোষণা হলেও তিন বছরে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আওতাধীন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। প্রতি মাসে মহানগর উত্তর-দক্ষিণের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ এ সময়ে একটি বৈঠকও হয়নি।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর সম্মেলন হলেও নানা জটিলতায় আটকে যায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। এর তিন বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়।
২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল একেএম রহমতুল্লাহকে সভাপতি ও সাদেক খানকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর উত্তর এবং আবুল হাসনাতকে সভাপতি ও শাহে আলম মুরাদকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এরপর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্যের উত্তর-দক্ষিণ মহানগর কমিটি, মহানগর উত্তরের অধীন ২৬টি থানা, ৪৬টি ওয়ার্ড ও ৯টি ইউনিয়ন এবং দক্ষিণের অধীন ২৩টি থানা ও ৫৭টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। দুই সদস্যবিশিষ্ট এসব কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও নানা জটিলতায় পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব হয়নি।
দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও সংগঠন দুটির সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ২ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উত্তরের দায়িত্ব পেয়েছেন লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও দক্ষিণে ড. আবদুর রাজ্জাক।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে দুই রকম মত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। সম্প্রতি তিনি যুগান্তরকে বলেন, প্রথমে দেখতে হবে কমিটি ঘোষণা হয়েছে কবে।
তারপর দেখতে হবে কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দিন ধরে সম্মেলন হতে পারে। তবে বিষয়টি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।