পাবনা ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৯ জনকে মৃত্যুদন্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলী এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি সাবকে সভাপতি ও সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু, পাবনা জেলা বিএনপি’র মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম আকতারুজ্জামান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের সভাপতি মোস্তফা নূরে আলম শ্যামল, বিএনপি নেতা মাহবুবুল রহমান পলাশ, শামছুল আলম, শহীদুল ইসলাম অটল, রেজাউল করিম শাহীন ও আশিকুর রহমান।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি পিপি আকতারুজ্জামান মুক্তা বলেন, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নিতে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাবার পথে ঈশ্বরদী স্টেশনে যাত্রাবিরতি কালে বিএনপি’র নেতাকর্মিরা ট্রেনে ও তার কামরায় গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই সময়ে জিআরপি পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে এ মামলায় ঈশ্বরদীর শীর্ষ স্থানীয় বিএনপি. যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলাটি দায়ের হওয়ার পরের বছর এই মামলায় পুলিশ কোন সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। কিন্তু আদালত ওই রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করেন। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।
এই মামলায় চার্জশীট ভূক্ত আসামিদের মধ্যে চলতি বছরের ৩০ জুন আদালতে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের ৩০ জন নেতাকর্মী হাজিরা দিতে গেলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মঙ্গলবার এই মামলার আরও দুই আসামী ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান ওরফে বাবলু এবং বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম টেনু আদালতে আত্মসমর্পন করে। অন্যদিকে পুলিশ ওইদিন রাতেই এই মামলার আরেকজন আসামিকে গ্রেফতার করে।
এই মামলায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন আসামী জেল হাজতে রয়েছে। এছাড়া পলাতক রয়েছে ১৪ জন এবং মারা গেছে ৫ জন।