নিজস্ব প্রতিবেদক ; আওয়ামী লীগের নাম না নিয়ে বিএনপির মহিলা এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বর্তমান শাসক গোষ্ঠি তাদের ক্ষমতা প্রলম্বিত করার লক্ষ্যে সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একমাত্র বাধা বলে করে। তাই মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রেখে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ মামলার মেরিট, তার বয়স, শারীরিক অবস্থা, সামাজিক অবস্থান, জেন্ডার- যে কোন বিবেচনায় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী জামিন তার অধিকার। তিনি যাতে সহজেই মুক্তি না পান তাই একটির পর একটি মামলা, নতুন নতুন মামলা, মিথ্যা মামলা তার সামনে আনা হচ্ছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব সংসদের আজকের বৈঠকে কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে জাতীয় জরুরি জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আনিত অগৃহিত নোটিশের ওপর দুই মিনিটের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সরকারি দলের সদস্যরা সেইম সেইম বলে বাধা দিচ্ছিল।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আরো বলেন, ১/১১ সরকারের সময়ে মামলা হয়েছে দুই বৃহৎ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কমিটি করে তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো তুলে নিয়েছে। একদিকে পুরানো মামলায় বিএনপির ২৬ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। অন্যদিকে নতুন করে যুক্ত হয়েছে এক লাখ মামলা। নির্বাচনের আগে আগে মৃত ব্যক্তি, বিদেশে থাকা ব্যক্তি, ঘটনা ঘটার আগেই মামলা- এই ধরনের অদ্ভুত সব মামলা করা হয়েছে গায়েবী মামলার অধীনে।
আইনের শাসন আর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বলেছেন, দেশে আইনের শাসন নেই। সরকার নিম্ন আদালতকে কব্জা করে এখন হাত বাড়িয়েছে উচ্চ আদালতের দিকে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের কারণে তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। সেই রায় তিনি বলেছিলেন, ডুবন্ত বিচার বিভাগ কোন রকমের নাক উঁচু করে টিকে আছে।
রুমিন আরো বলেন, তারেক রহমানকে যে বিচারক নিম্ন আদালতে খালাস দিয়েছিলেন তাকে পরে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। সংবিধানের ১১৫ এবং ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচার বিভাগ এখনো
কার্যত সরকারের অধীনেই রয়ে গেছে। সেপারেশন অব পাওয়ারর অনেকটা সোনার পাথর বাটির মতো। বিচারবিভাগ যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে তাহলে তো রাষ্ট্রের জন্য সমূহ বিপদ তৈরি করবে। এসময় নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি নোটিশের বাকী অংশ পড়তে পারেনি।
এদিকে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে জাসদের মঈন উদ্দিন খান বাদল সংসদে রুমিন ফারহানার নোটিশের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ৭১বিধিতে এ ধরনের বিষয় নিয়ে নোটিশের ওপর আলোচনার সুযোগ দেয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্পিকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নোটিশের আলোচনার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই ধরণের বিষয় কিভাবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়। তবে এ ব্যাপারে স্পিকার কোন জবাব না দিয়েই পরবর্তী কর্মসূচীতে চলে যান।