চাঁদপুর প্রতিনিধি;
চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে ইলিশ শিকারের সময় জেলেদের সঙ্গে নৌপুলিশের সংর্ঘষ হয়েছে। এতে তিন পুলিশসহ সাত জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আটক হয়েছে ১৮ জেলে।
সোমবার সকাল ৭টায় জেলার পদ্মা নদীর দুর্গম চর রাজরাজেশ্বরে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নৌপুলিশ ও মৎস্যবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ভোরে পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ শিকার করছে জেলেরা। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সংঘবদ্ধ জেলেরা নৌপুলিশ ও মৎস্যবিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর লগিবৈঠা নিয়ে হামলা করে। হামলার সময় ৮-১০ ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে শতাধিক জেলে তাদের ঘিরে ধরে।
অভিযানে অংশ নেওয়া নৌপুলিশ সুপার জামশের আলী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নৌপুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এসময় অনেকেই দ্রুত গা ঢাকা দিলেও ১৮ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
এতে পুলিশের উপপরিদর্শক জাকির হোসেন (৩৫), নায়েক দেলোয়ার হোসেন (৩২), কনস্টেবল শাহারিয়ার (৩০), তাদের স্পিডবোটের চালক রুবেল (২৫), জেলে মনির শেখ (৩৫), নাজমুল হোসেন (২০)সহ তিন জেলে আহত হন।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আনিছুর রহমান জানান, আহত জেলেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ায় তাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। হাসপাতালে আহত জেলে মনির শেখ জানান
ঘটনা সম্পর্কে মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদ মোস্তফা জানান, অভিযান কালে তাদের ওপর জেলেদের বেপরোয়া আচরণে জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা লগিবৈঠার সঙ্গে দেশি অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সদর উপজেলা ও পাশের হাইমচরে পৃথক আরেক অভিযানে ৮ জেলেকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিদুজ্জামান ও মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় অভিযানে অংশ নেন। পরে আটককৃতদের সাতজনকে একবছর করে কারাদণ্ড প্রদান এবং একজন কিশোর হওয়ায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, পৃথক এই দুটি অভিযান কালে ৫০ কেজি ইলিশ, ৬টি ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরা নৌকা এবং ৫০ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিকেলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ইলিশ রক্ষা টাস্কফোর্সের উদ্যোগে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে নৌ শোভাযাত্রা বের হওয়ার কথা রয়েছে।