প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আগামী রবিবার যুবলীগের সম্মেলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিবেন। ঐ দিন বিকাল ৫টায় গণভবনে যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, একজন বাদে সকল প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন না বলে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী রবিবার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিবেন বলে তাকে জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি ইত্তেফাককে নিশ্চিত করেন হারুনুর রশীদ।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা ইত্তেফাককে জানান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে? এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে? প্রধানমন্ত্রীও তাদের বিষয়ে ক্ষুব্ধ। তিনি চান না রবিবারের বৈঠকে তারা উপস্থিত থাকুক। এটি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে থাকবেন না সংগঠনটির বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। এদিকে রবিবারের ঐ বৈঠকে যুবলীগের সম্মেলনকে সফল করতে ১২টি উপকমিটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বৈঠকে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের সম্মেলনের তারিখও চূড়ান্ত হবে। এক্ষেত্রে ২২ নভেম্বর দুই মহানগর শাখার সম্মেলন হতে পারে। জানা গেছে, বর্তমান চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতে আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্য কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করতে পারেন। কে সভাপতিত্ব করবেন সেটি নির্ধারণের জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ওপর ছেড়ে দিবেন প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী রবিবারের বৈঠকে ঠিক করে দিতে পারেন। এছাড়া যুবলীগ নেতাদের বয়সসীমা নির্ধারণও করা হতে পারে এ বৈঠকে।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী যুবলীগেরও বয়সসীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসকে (সম্মেলন) সামনে রেখে নেতৃত্বে বড়ো পরিবর্তনের মাধ্যমে সংগঠনকে বিতর্কমুক্ত করার পাশাপাশি নেতাদের বয়সসীমা ৫০ বছর নির্ধারণ করার চিন্তাভাবনা চলছে। ১৯৭৪ সালের যুবলীগের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মাত্র ৩৩ বছর বয়সে। ঐ সময় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪০ বছর বয়সসীমার বিধান ছিল। তবে ১৯৭৮ সালে অনুষ্ঠিত সংগঠনটির দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসে ঐ বিধানটি বিলুপ্ত করা হয়। যুবলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অধিকাংশের বয়স ষাটোর্ধ্ব। ৬০ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে মাত্র পাঁচজনের বয়স ৬০ বছরের নিচে। বাকি ২০ জনের বয়সই ষাটের বেশি। যুগ্ম সম্পাদকের প্রত্যেকের বয়সই ৫৫ বছরের অধিক। আট সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে শুধু একজনের বয়স ৫০ এর কম। বাকি সাত জনের বয়সই পঞ্চাশোর্ধ্ব। সহসম্পাদক ২০ জনের মধ্যে ১৫ জনেরই বয়স ৫০-এর বেশি। সদস্য ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জন ৫০ বছরের বেশি।