আহমেদ আল আমীন;
অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ৬০০ জনের নতুন তালিকা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল ৪ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতিমধ্যে ১১০ জনের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে কমিশন। এর মধ্যে রয়েছেন সরকারদলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ তিন সংসদ সদস্য। ক্যাসিনো কিং ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের পর এবার আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন বলে পরিচিত হালের আলোচিত চরিত্র আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে কমিশন। কৃষক লীগ সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সম্পদেরও অনুসন্ধান চলছে। ক্যাসিনো ব্যবসা, ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনায় নাম আসা টেন্ডার কিং জি কে শামীমসহ আলোচিত কয়েকজনের ৬১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণপূর্ত অধিদফতরের নয়জন প্রকৌশলীসহ ১১ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়া আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব এবং জব্দ করা হতে পারে বলে দুদকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, অবৈধ সম্পদের পাশাপাশি বিদেশে ওইসব ব্যক্তির অর্থ পাচারের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ক্যাসিনো কারবার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিকদের বিরুদ্ধে কমিশনের অনুসন্ধান চলছে। এরই মধ্যে সন্দেহভাজন অনেকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশনের অনুসন্ধানের তালিকায় আসা ব্যক্তিদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলছে। অনেকের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ৪০০ জনের ব্যাংক হিসাব ও আর্থিক লেনদেনের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যের ভিত্তিতে এরই মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। দুদকসূত্র জানিয়েছেন, কমিশনের অনুসন্ধান তালিকায় বহুল আলোচিত ও বিতর্ক সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম উঠে এসেছে। ২৭ অক্টোবর গুলশানে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আধুনিক ক্যাসিনো সরঞ্জামসহ বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করা হয়। অতিসম্প্রতি দুদকের নথিতে কৃষক লীগ সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার নামও এসেছে। সংগঠনে পদ-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে সংস্থাটি। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করে আলোচিত যুবলীগের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তার সম্পদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ক্যাসিনোর টাকা ছিল ৬১৩ অ্যাকাউন্টে : দুদকের অনুসন্ধানের আওতায় আসা ১১০ জনের মধ্যে কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। ক্যাসিনো কারবারিদের অনেকে অবৈধ টাকাগুলো রাখতেন ব্যাংকে। তাদের দুর্ভেদ্য সিন্দুক হিসেবে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্ট ব্যবহৃত হয়েছে। তবে দুদকের ‘হাতুড়ি-শাবলের পেটা’য় ভেঙে গেছে সেই ভল্ট। ৬১৩টি অ্যাকাউন্টের বিপরীতে থাকা কয়েক শ কোটি টাকার অবস্থান স্থগিত করা হয়েছে। দুদকসূত্র জানান, এ পর্যন্ত আসা তথ্যমতে, বিভিন্ন ব্যাংকে জি কে শামীমের অ্যাকাউন্ট ছিল সবচেয়ে বেশি। ১৯টি ব্যাংকে শামীম, তার মা ও স্ত্রীর ১৩২টি হিসাবে ছিল সর্বমোট ৩২৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ব্যাংকে শামীমের ঋণ ১৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ৮টি ব্যাংকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ৭১টি অ্যাকাউন্টে ছিল ২৭ কোটি টাকা। আর এনামুল হক ভূঁইয়া ও রুপন ভূঁইয়ার ৯টি ব্যাংকে ছিল ৯১টি অ্যাকাউন্ট। সেগুলোয় ছিল ১৯ কোটি টাকা। এস এম রবিউল ইসলাম সোহেলের ১৭টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে। ৬টি ব্যাংকে তার ছিল ৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। গণপূর্তের মুমিতুরের ৬টি ব্যাংকে ছিল ৯ কোটি টাকা। তবে ১টি ব্যাংকে এনামুল হক আরমানের ৬টি অ্যাকাউন্টে মাত্র ৩৪ টাকা পেয়ে তাজ্জব বনে গেছেন দুদক কর্মকর্তারা। তারা মনে করছেন, টাকাগুলো অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অনুরূপভাবে ব্যাংকে যুবলীগ নেতা সম্রাটের থাকা টাকাও তার নামের সঙ্গে ঠিক যায় না। ৪টি ব্যাংকে তার ১৪টি অ্যাকাউন্টে মাত্র ১ কোটি ১১ লাখ টাকার হদিস পাওয়া গেছে। সম্রাটের কোনো ব্যাংক ঋণ নেই। শফিকুল আলম ফিরোজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ১৬টি। ৯টি ব্যাংকে তার প্রায় ৭ কোটি টাকা রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির তিন কাউন্সিলরের মধ্যে তারেকুজ্জামান রাজীবের অ্যাকাউন্ট ৩১টি। ৫টি ব্যাংকে তার ১ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানের ৪২ অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। ৭টি অ্যাকাউন্টে আরেক কাউন্সিলর সাঈদের সোয়া ৩ কোটি টাকা ছিল। যুবলীগের দফতর সম্পাদক কাজী আনিসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ৩৩টি। তাতে রয়েছে সোয়া ৫ কোটি টাকা। সেলিম প্রধান ও তার চার সহযোগীর মোট ৭৫টি অ্যাকাউন্টে প্রায় দেড় কোটি টাকা রয়েছে। লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ৪০টি অ্যাকাউন্ট। তাতে ৩ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। যাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ অথচ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ কম, তাদের ব্যাপারে আরও অনুসন্ধান চালানো হবে। দুদকের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, সাম্প্রতিক অভিযান ও ধরপাকড়ের মধ্যেই আর্থিক অপরাধীরা ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে রেখেছেন অথবা অন্য কোথাও জমা রেখেছেন।
জানা গেছে, অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে নয়জন প্রকৌশলীসহ গণপূর্ত অধিদফতরের ১১ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তারা হলেন গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল মোমেন চৌধুরী ও রোকন উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা, মোহাম্মদ শওকত উল্লাহ, মোহাম্মদ ফজলুল হক, আবদুল কাদের চৌধুরী, আফসার উদ্দিন ও ইলিয়াস আহমেদ, কর্মকর্তা সাজ্জাদুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ সহকারী মুমিতুর রহমান। এ বিষয়ে গতকাল পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশন সুপারের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। ক্যাসিনোকান্ডে এ নিয়ে ৩৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
দুদকসূত্র জানান, এর আগে চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ দুদকের তালিকায় ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নাম আসে। পাশাপাশি এমপি শাওনের স্ত্রী ফারজানা চৌধুরীর ব্যাংকে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সহসভাপতি এনামুল হক আরমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুলের সম্পদেরও অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, টেন্ডার কিং গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করা হয়েছে। জি কে শামীমের স্ত্রী শামীমা সুলতানা ও ক্যাশিয়ার যুবলীগের সোহেলের সম্পদের অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এ তালিকায় উঠে এসেছে গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাই, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হালিমের নামও। তাদের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে শামীমকে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু, তার ভাই থানা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক রুপন ভূঁইয়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটির তিন কাউন্সিলর এ কে এম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ কমিশনার, হাবিবুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান ও তারেকুজ্জামান রাজীব, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বহিষ্কৃত দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান দুদকের অনুসন্ধানের আওতায় এসেছেন। এ ছাড়া এনামুল হকের সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ রহমান, এনামুল হকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হারুন অর রশিদ, রাজধানীর কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিকুল ইসলামের নাম দুদকের নথিতে রয়েছে। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী নাবিলা লোকমান, কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি কৃষক লীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ এবং তাদের সহযোগীরা অনুসন্ধানের তালিকায় রয়েছেন বলে দুদকসূত্র জানিয়েছেন। এ ছাড়া অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান, শাহেদুল হক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার তালিকায় রয়েছেন। জানা গেছে, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, জি কে শামীম, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, এনামুল হক আরমান, হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান, শফিকুল ইসলাম ফিরোজ, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ও সেলিম প্রধান র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। এর মধ্যে শামীম ও তার মা, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, কাজী আনিসুর রহমান, এনামুল হক এনু, সেলিম প্রধানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে এরই মধ্যে মামলা করেছে দুদক। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাওসারের স্ত্রী পারভীন লুনা, মেয়ে নুজহাত নাদিয়া নীলা, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী, যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, তার স্ত্রী সানজিদা রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক কে এম মাসুদুর রহমান, তার স্ত্রী লুতফুন নাহার লুনা, বাবা আবুল খায়ের খান, মা রাজিয়া খান এবং যুবলীগ নেতা মুরসালিন আহমেদ, তার বাবা আবদুল লতিফ, মা আছিয়া বেগম ও স্ত্রী কাওসারী আজাদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অনুসন্ধানের আওতায় আসা কয়েকজনের গোটা দশেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারেও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যাব ও পুলিশের প্রায় অর্ধশত অভিযানে এরই মধ্যে ৩ শতাধিক অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটি কোটি নগদ টাকার পাশাপাশি বহু মূল্যের ক্যাসিনোসামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ক্যাসিনোবাজদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি কমিশনের তফসিলভুক্ত বলে ৩০ সেপ্টেম্বর টিম গঠন করে অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক।
কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের ফিরোজের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের মামলা : কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৬৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল কমিশনের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফিরোজের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। কমিশনের জনসংযোগ কার্যালয় জানিয়েছে, ফিরোজ অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার ৬৩৯ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। এজাহারে বলা হয়, ফিরোজ সর্বশেষ ২০১৭-১৮ করবর্ষ পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ ৪২ হাজার ৪৭০ টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছেন। এর স্বপক্ষে কোনো বৈধ আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার সম্পত্তির মূল্য অনেক বেশি হবে।
এ ছাড়া ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় তার নামে-বেনামে আরও স্থাবর সম্পদ রয়েছে মর্মে গোপন সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়। গত ২০ সেপ্টেম্বর কলাবাগান ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ফিরোজসহ পাঁচজনকে অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে র্যাব। পরদিন অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে র্যাব বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে।