জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যায় গণভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভার সভাপতিত্বকালে এ কথা ঘোষণা করেন।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, গত ২৫ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সংস্থার ৪০ তম সাধারণ পরিষদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘মুজিব বর্র্ষ’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কো মহাসচিব অড্রে অজুলে এবং সাধারণ পরিষদের সভাপতি আল্টে সেনজিজার সহ বিভিন্ন কমিটি এবং কমিশনের চেয়ারপার্সনরা পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় জানানো হয়, বছরব্যাপী অনুষ্ঠেয় ‘মুজিব বর্ষ’র জাতীয় অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন হবে আগামী ১৭ মার্চ রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে।
সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্ক যুক্ত হতে হবে। বঙ্গবন্ধু এই মাটির সন্তান, কাজেই এটা (অনুষ্ঠান) কোন রংচটা অনুষ্ঠানে রূপ নিতে পারবে না।’
ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য এবং সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নূর ভাই (আসাদুজ্জামান নূর) এবং লাকী ভাই (লিয়াকত আলী লাকী) কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে (উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করার)।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই আমি মনে করি যে, অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে, কোন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির দ্বারা হবে না। তবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি এই বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।’
সভার শুরুতে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার সাহায্যে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৭ মার্চ বিকেল ৪টায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে।
কামাল নাসের বলেন, অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ফ্লাইপাস্ট, একশ’ শিল্পীর অংশগ্রহণে যন্ত্রসঙ্গীত, বাংলা এবং ইংরেজীতে থিম সং পরিবেশন, ৫৫ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং লেজার শো।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানার হাতে ‘শ্রদ্ধা স্মারক’ তুলে দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন।
তিনি বলেন, পাশাপাশি কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন।
সভায় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার পর প্রধানমন্ত্রী ‘মুজিব বর্ষ’র অনুষ্ঠানমালাকে সফল করে তুলতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, ড.গওহর রিজভী, ড.তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এবং সালমান এফ রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম. আইসিটি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দোকার আনোয়ারুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান নূর এমপি, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।