শুদ্ধি অভিযান বন্ধ হয়নি, কেউ ছাড় পাবে না: কাদের

 

নড়াইল প্রতিনিধি;

 

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুদ্ধি অভিযান বন্ধ হয়ে যায়নি, চলছে। সাংবাদিকরা বলছেন, শুদ্ধি অভিযান স্মিথ হয়ে গেছে। কিন্তু অভিযান স্মিথ হয়ে যায়নি। যারা অপকর্ম করছে তারা নজরদারিতে রয়েছে, সময় মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, অপকর্ম করে পার পাওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেবেন না।

কাদের বলেন, বিতর্কিতদের দলে টানবেন না। হায়ার করে কাউকে আনার দরকার নেই। পেয়ার করে ও স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে কাউকে কমিটিতে রাখা যাবে না। কোনো পকেট কমিটি করা যাবে না। অসংখ্য কর্মী আওয়ামী লীগে রয়েছে। দুঃসময়ের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের জায়গা করে দিতে হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান মঞ্চে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। পরে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবারও বিগত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের আরও বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। শেখ হাসিনা আছে বলেই সীমান্ত বিজয়, সমুদ্র বিজয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা আছে বলেই পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমানিবিক কেন্দ্র, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হচ্ছে। তিনি আছেন বলে নড়াইলের কালনা সেতু, বারইপাড়া সেতু, নড়াইল-ফুলতলা সড়কের প্রশস্তকরণ, নড়াইল-মাগুরা সড়ক প্রশস্তকরণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে।

এ সময় তিনি নড়াইলের কৃতি সন্তান ক্রিকেট তারকা মাশরাফির অনুরোধে নড়াইল শহরের প্রধান সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান।

এর আগে সকালে প্রথমে অতিথিবৃন্দ জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে মঞ্চে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্যাচার্য।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কার্য নির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও পারভীন জামান কল্পনা, শেখ তন্ময় এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নড়াইল পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাস প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির আমলে দেশে দুর্নীতি ও  সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড চলেছে। দুর্নীতির কারণে খালেদা জিয়া কারাগারে। এখানে সরকারের কিছু করার নেই। বিএনপি এখন দুর্নীতিবাজ খালেদা ও তারেক জিয়ার জন্য আন্দোলন করছে।

বিএপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে রাজপথে অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করলে জনগণ তার সমুচিত জবাব দেবে।

মাশরাফী বলেন, সময় এসেছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করার। দলের গ্রুপিংয়ের রাজনীতি বন্ধ করা প্রয়োজন। মাদককে না বলতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

প্রথম অধিবেশনের শেষে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ৪৭ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আপনাদের ২০ মিনিট সময় দেওয়া হলো, আপনারা সমঝোতার ভিত্তিতে এখান থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পদক পদে একজন করে নাম ঠিক করে আসুন।

এর ২০ মিনিট পর প্রধান অতিথি ফের মঞ্চে এসে সভাপতি হিসেবে আবারও অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজাম উদ্দিন খান নিলু, এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নড়াইল পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাসকে এবং কার্যনির্বাহী কমিটির এক নম্বর সদস্য হিসেবে অ্যাডভোকেট সিদ্দিক আহম্মেদের নাম ঘোষণা করেন।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস দ্বিতীয়বার সভাপতি এবং নিজাম উদ্দিন খান নিলু প্রথমবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।

শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ