রিকশাচালক থেকে ব্যবসায়ী বনে যাওয়া এরশাদ আলী চার ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নেমে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক ছয় শীর্ষ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাঁরা হলেন সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলওয়ার হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. গোলাম নবী ও হারুন অর রশীদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এস এম হোজাইফা নোমান এবং সাবেক এফএভিপি নাজিম উদ্দিন মো. তারেক।
গতকাল রোববার ব্যাংকটির সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও উত্তরা শাখার শাখাপ্রধান শেখ রেবেকা রহমান, সাবেক এভিপি ও উত্তরা শাখার অপারেশন ম্যানেজার আরিফুর রহমান, উত্তরা শাখার ক্রেডিট ইনচার্জ ও এফএভিপি আলমগীর কবীর এবং ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, এরশাদ আলীর কাছে এবি ব্যাংকের পাওনা ১৪৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ৮৭ কোটি, ফিনিক্স ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ২৯ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংকের ১৫ কোটি এবং সাউথইস্ট ব্যাংক পাবে ৬ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, একসময় রাজশাহী শহরে রিকশা চালাতেন এরশাদ আলী। পরে রিকশা ছেড়ে শুরু করেন বালুর ব্যবসা। ধীরে ধীরে পাথর, রড ও সিমেন্টের ব্যবসায় নামেন। তাঁর ব্যবসায়িক ও আর্থিক সামর্থ্য যাচাই না করে কয়েকটি ব্যাংক তাঁকে ঋণ দেয়। প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে এরশাদ আলী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সূত্র জানিয়েছে, এরশাদ আলীর মালিকানাধীন এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশন বর্তমানে দেশের শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির একটি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া এরশাদ আলীকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। দুদক এখন এ ঘটনার নেপথ্যে কারা আছে, তা খতিয়ে দেখছে। সে কারণে ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পর অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরও দুদকে ডাকা হবে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।