নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষ দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ধর্ষণের পর মাথার চুল ন্যাড়া করে দিয়ে শরীরে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন স্বামী। এ ঘটনার পর পরিবহন শ্রমিক স্বামী রফিকুল ইসলাম পালিয়ে গেছে।
শনিবার দুপুরে বগুড়া শহরের চকলোকমান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত ওই গৃহবধূ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বজনরা জানান, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পরিবহন শ্রমিক রফিকুল ইসলাম দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেন। তিনি গত দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে শহরের চকলোকমান এলকায় নুরুল ইসলামের বাসা ভাড়া নেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর অভিযোগ, তার স্বামী বিভিন্ন সময় বাসায় অপরিচিত পুরুষ নিয়ে এসে তাকে দেহব্যবসা করতে বলত। এতে তিনি রাজি না হলে তাকে এসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয় রফিকুল। বিষয়টি তার বাবা-মা ও শ্বশুর-শ্বাশুড়িকেও জানিয়েছেন। কিন্তু তার স্বামী নিয়মিতভাবে তাকে দেহ ব্যবসার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
ওই গৃহবধূ আরও জানান, স্বামীর ভয়ে তিনি আজ সকাল থেকে বাসায় তালা দিয়ে বসেছিলেন। বেলা ১২টার দিকে তার স্বামী দু’জন অপরিচিত পুরুষ নিয়ে বাসায় যায়। স্বামীর মনোভাব বুঝে তিনি দরজা খুলে দেননি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তারা বাড়ির দেয়াল টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর রফিকুল তার স্ত্রীর হাত মুখ-বেঁধে রাখে এবং সঙ্গে আসা দুই ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করে। এরপর রফিকুল তার স্ত্রীর মাথার ডান পাশের কিছু অংশ ন্যাড়া করে দেয়। পরে একটি বোতলে থাকা দাহ্য পদার্থ তার শরীরে ঢেলে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্বামীর দেওয়া আগুনে তার পেট থেকে নিম্নাংশ পুড়ে যায়। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
শজিমেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, ওই নারীর চিকিৎসা তদারকি করা হচ্ছে। ওসিসি থেকে তাকে সকল ধরনের সহায়তাই দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পুলিশকে পুরো বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
এ ঘটনা জানার পর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল রফিকুলকে আটক করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারি ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিউল আলম জানান, ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে আগুনে পোড়াকাপড় ও কাটা চুল সংগ্রহ করা হয়েছে। রফিকুলকে আটক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।