নিজস্ব প্রতিবেদক;
ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেসবিহীন, নিবন্ধনহীন, চলাচলের অযোগ্য গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং এসব গাড়ি বন্ধে ট্রাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। আগামী ১ জুন বিবাদিদের এ নির্দেশনার বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত।
এজন্য প্রতি জেলায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিআরটিএ এবং পুলিশের সমন্বয়ে ট্রাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া টাস্কফোর্সের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে ডিসিদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম এর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও সড়ক পরিবহন সচিবকে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
আদালতে বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন-ব্যারিস্টার মইন ফিরোজী ও অ্যাডভোকেট রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন-ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
একেএম আমিন উদ্দিন বলেন, বিআরটিএ আদালতকে জানায় তারা জনবল সংকটের কারণে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারছেন না। তারা টাস্কফোর্স গঠনের আবেদন করেন। এই জন্য হাইকোর্ট টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন।
এই টাস্কফোর্স সকল গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে পারবেন এবং ফিটনেসবিহীন, আনফিট ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন গাড়ী আটক, চালককে গ্রেপ্তার, জরিমানা ও গাড়ি ডাম্পিং করতে পারবেন।
অপরাধসমূহ বিচার করার জন্য সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ১১৪, ১১৫ তে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
সেই আইন অনুযায়ী পুলিশের যে ক্ষমতা, বিআরটিএর যে ক্ষমতা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যে ক্ষমতা দেয়া আছে, সেগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বাস্তবায়ন না করে সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতেই এই টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গাড়ির নিবন্ধন ও ফিটনেস সংক্রান্ত বিআরটিএ ও পুলিশ প্রধানের দেওয়া প্রতিবেদন দেখে গত বুধবার বিআরটিএ চেয়ারম্যান ও পুলিশ প্রধানকে রোববার তা জানাতে বলা হয়েছিল।
পুলিশ প্রধানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ২৩ অক্টোবর হাই কোর্টের নির্দেশের পর বিভিন্ন তেলের পাম্প কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে, যাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে তেল দেয়া না হয়। আদালতের আদেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ অনুযায়ী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আর বিআরটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ২৩ অক্টোবর হাই কোর্টের আদেশের পর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে নিবন্ধিত চার লাখ গাড়ির মধ্যে থেকে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৪ গাড়ির ফিটনেস নবায়ন সনদ ছিল। আর নতুন নিবন্ধিত ১৯ হাজার তিনটি গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে।
এর আগে গতবছর ২৩ অক্টোবর আদালত ফিটনেসবিহীন গাড়িতে তেল-গ্যাস-পেট্রোলসহ সব ধরনের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
তারও আগে গতবছর ২৩ জুলাই নিবন্ধন নিয়ে ফিটনেস নবায়ন করেনি এমন চার লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি গাড়িকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।