মৃত্যুর কোলে আরো ৩৩ জন, শনাক্ত ৩,১৬৩

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ১৬৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৪২৪ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৫৭ জন।

আজ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ২৩ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। এঁদের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৪১৪ জনের।

এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৯১৩ জন এবং নারী ৫১১ জন।

জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের তিনজন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, খুলনা বিভাগের পাঁচজন, বরিশাল বিভাগের একজন, রংপুর বিভাগের দুইজন এবং সিলেট বিভাগের পাঁচজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৯ জন এবং বাসায় চারজন।

বিভাগ অনুযায়ী এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁরা ঢাকা বিভাগের এক হাজার ২০৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৬২৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ১২৫ জন, খুলনা বিভাগের ১৩৩ জন, বরিশাল বিভাগের ৮৯ জন, সিলেট বিভাগের ১১০ জন, রংপুর বিভাগের ৭৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৬ জন।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৯১০ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন এক লাখ তিন হাজার ২২৭ জন।

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৯৮৮টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪৫৩টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ১৬৩ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৫৭ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০০টি।

ব্রিফিংয়ের শুরুতেই জানানো হয়, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষায় দেশে আরো দুটি পরীক্ষাগার সংযোজিত হয়েছে। একটি সরকারি অপরটি বেসরকারি। সরকারি পর্যায়ের পরীক্ষাগারটি হলো সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, ঢাকা। আর বেসরকারি পর্যায়ের পরীক্ষাগারটি হলো অথেনটিক ডায়াগনোস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন লিমিটেড, ঢাকা। এ নিয়ে করোনা পরীক্ষায় দেশে মোট পরীক্ষাগারের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৯টিতে।

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৮৬১ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৭২ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩৮ হাজার ১৩১ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৭১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৬৬০ জন।

কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৫০ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬১৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৯৮ হাজার ৩০৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৩৬ হাজার ৬৬২ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬১ হাজার ৬৪৩ জন।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৬২ হাজার ৮৫৮টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে এক কোটি ৬৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩৪৮টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্লাটফর্ম মুক্তপাঠ-এ অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্ত হয়েছেন আরো চারজন চিকিৎসক। এ নিয়ে এই বিভাগে বর্তমানে মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪৮১ জন। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ