দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৫৮তম দিনে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৩ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৫১৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৭৫১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৯৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৪ হাজার ৮২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৯৬ জনের দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ২২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৩ লাখ ২ হাজার ৭৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৯৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১১৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৯ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৩ শতাংশ কম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৫০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৩১৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৭৬৭টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৬টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৮২০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৬৯টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৪২ জনের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৯ জন আর বাড়িতে ৩ জন। পুরুষ ৩৩ জন, নারী ৯ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ২ হাজার ৭৮২ জন, শতাংশের হিসেবে ৭৯ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং নারী ৭৩১ জন শতাংশের হিসেবে ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিবেচনায় রয়েছে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২২ জন এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২৪ জন। এখন পর্যন্ত বয়সের হিসেবে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন, দশমিক ৫৪ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন, দশমিক ৯৭ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯১ জন, ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২২৬ জন, ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৮০ জন, ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯৯৭ জন, ২৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১ হাজার ৬৬৬ জন, ৪৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৪২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২৭ জন, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের ৩ জন করে, বরিশাল বিভাগে ১ জন, সিলেট বিভাগে ৪ জন এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন করে।এখন পর্যন্ত মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৬৮১ জন, ৪৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে ৮১৯ জন, ২৩ দশমিক ৩১ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে ২২৬ জন, ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ; খুলনা বিভাগে ২৭১ জন, ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে ১৩৫ জন, ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ; সিলেট বিভাগে ১৬২ জন, ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ; রংপুর বিভাগে ১৪১ জন, ৪ দশমিক ০১ শতাংশ; ময়মনসিংহ বিভাগে ৭৮ জন, ২ দশমিক ২২ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৪৭৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৮ জন, রংপুর বিভাগে ৪২ জন, খুলনা বিভাগে ১৬০ জন, বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৫৭ জন, সিলেট বিভাগে ৪৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে রয়েছেন ১১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৬২ জন, ছাড় পেয়েছেন ৩৯২ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৫৯ হাজার ২০৭ জন, ছাড় পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৭৭জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৭৩০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮১৫ জন, ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৮৭৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন ৪ লাখ ৩২ হাজার ৭০১ জন, ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৭২৮জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৮৯ জন, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯৬ জন। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২২৬ জন, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৪২ জন এবং আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯২ জন। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৭০টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ২৫৭ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৬ জন এবং খালি আছে ২৩৭টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৯৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৩৫০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৩২টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৯০২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৭৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৫১৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ১৬ হাজার ৬০৪টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ১৮৫ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৭৭ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ২০৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ১৬ হাজার ১৫১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৬৭৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৪৫২ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৫৬ জন এবং এ পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৬৩৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ২১০ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৬৮ জন এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৩২ হাজার ৪৯৯ জন।