নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ ৮ দিন বন্ধ থাকার পর কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে নবম দিনে বিকেল থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ৭টা থেকে নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চ্যানেল সক্রিয় করতে ড্রেজার কর্তৃপক্ষের আপ্রাণ চেষ্টায় ড্রেজিং প্রায় শেষের পথে। শুক্রবার বিকেলে শিমুলিয়া ঘাট থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৩টি ফেরি ছাড়া হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিমুলিয়া ঘাটে ৩টি ফেরি লোড করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরো ফেরি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিকেলে যে ফেরি ছাড়া হয়েছে, তা ঠিকঠাক মতো কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পৌঁছলে শনিবার সকাল থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে। ড্রেজিং কার্যক্রম চললেও কাজের অগ্রগতি দেখছে না ঘাটে আটকে পড়া যাত্রী ও চালকরা।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে দেশের ব্যস্ততম কাঁঠালবাড়ি শিমুলিয়া নৌপথ। এদিকে শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষামুলকভাবে বীর শ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর কাঠালবাড়ি ঘাটে পৌছায়। এর আগে ফেরিটি লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে আটকে যায়। আধাঘন্টা পর ফেরিটি উদ্ধার করা হয়। এরপর ফেরি ক্যামেলিয়া সফলভাবে পার হয়ে যায়। ৬টার আগে কে-টাইপ ফেরি কাকলি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ত্যাগ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ দিন ধরে ঘাটেই খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে পরিবহন ও ট্রাক চালকরা। অনেকের পকেটের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের কাছ থেকে টাকা এনে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছে। ফেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটে জনমানুষ শূণ্য হয়ে যাওয়ায় ঘাট এলাকার খাবার হোটেলগুলোর প্রায় বন্ধ। এতে খাবার সংকটে পরতে হচ্ছে আটকে পড়া পরিবহন চালক ও হেলপারদের। স্রোতের কারণে ভেসে আসা ময়লা আবর্জনা আটকে ড্রেজিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ড্রেজিংএ কর্মরত কর্মকর্তারা।
পদ্মা নদীতে নাব্য সংকট, তীব্র স্রোত ও পদ্মাসেতুর নিরাপত্তাজনিত কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। মূলত নাব্য সংকটের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিকল্প রুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয় যাত্রী ও চালকদের। কাঁঠালবাড়ি ঘাটে কোন যানজট নেই। ফেরি চলাচলের খবর শুনে মানুষের মাঝে চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটে যাত্রী চাপ তেমন নেই। বর্তমানে ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পীডবোট পদ্মায় চলাচল করছে। এই রুটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় দৌলদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে চাপ বেড়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, পদ্মা সেতুর ২৫নং পিলারের কাছে চায়না ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণের কাজ করা হয়। বেশ কিছু পলি জমে নৌপথের এক পাশ ভরাট হয়ে গেছে। চায়না ড্রেজারের পাইপ সরানোর কাজ চলছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিআইডব্লিউটিসি‘র (শিমুলিয়া) মেরিন অফিসার আহমেদ আলী বলেন, “শিমুলিয়া ঘাট থেকে এখন ২টি ফেরি পরীক্ষামূলকভাবে ছাড়া হবে। এ জন্য দুটি ফেরি লোড করা হচ্ছে। কোনো সমস্যা না হলে আরো ফেরি ছাড়া হবে। তবে রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে”