আ.লীগের টার্গেট ২০২৩

উন্নয়নের ওপর ভর করে ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগেই চলমান বড় বড় প্রকল্পগুলো জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা এবং আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দলকে এগিয়ে নিতে পারবে এমন ‘যোগ্য নেতৃত্ব’ বাছাই করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দলটি। ঠিক সময়ে যেন সকল প্রকল্পের কাজ শেষ করা এবং দলের তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সংকটের মধ্যেও নিয়মিত গণভবন থেকে সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড ও দলীয় কর্মকান্ড তদারকি করছেন।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের আগেই পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, কর্ণফুলি টানেল, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লাভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজসম্পন্ন করা হবে। এছাড়াও ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রকল্প দ্রুত শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই প্রত্যেকটি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির আলাদা আলাদাভাবে খোঁজ নিচ্ছেন। অর্থের অভাবে প্রকল্পের কাজে যেন ধীরগতি না আসে সেজন্য অর্থ ছাড় দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সময় বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানোর অসাধু প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনের আগেই সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা জনগণকে দিতে চায়। ‘উন্নয়ন’ ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে ওই নির্বাচনের দলের নির্বাচনী ইশতেহার করা হবে।

এর পাশাপাশি দলীয় কর্মকান্ডে গতি আনতে নির্দেশনা দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। গত ১৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর বৈঠকে সারাদেশের দলীয় কাজে গতি আনতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সভাপতিমন্ডলীর সদস্যদের দলীয় কাজে অংশগ্রহণ বাড়াতে বলেছেন। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে আলাদা ৫টি সাংগঠনিক টিম করা হয়েছে তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে।

আওয়ামী লীগের দফতর সূত্র জানায়, দলের গত সম্মেলনের আগে পরে মোট ৩১টি জেলার সম্মেলন হয়েছে। এগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি যেন শক্তিশালী হয়, অনুপ্রবেশকারীরা যেন দলে না ঢুকতে পারে।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সঠিক সময়ে প্রকল্প শেষ করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। প্রকল্পের সময় বাড়িয়ে ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে কঠোর সরকার। সময় মত সব প্রকল্প শেষ করা হবে। গত নির্বাচনের আমাদের দলের ইশতেহার ছিল। আগামী নির্বাচনের আগে জনগণকে দেয়া সেই ইশতেহার অবশ্যই বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সময় মত সব প্রকল্প শেষ করার বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে। প্রকল্প সংশোধনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়া হচ্ছে। তিন বার কোনো প্রকল্প সংশোধনের জন্য প্রস্তাব এলে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ইনকিলাবকে বলেন, গত নির্বাচনে আমাদের ওয়াদা ছিল পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ বড় বড় কয়েকটি প্রকল্প জনগণকে উপহার দেয়া হবে; আগামী নির্বাচনের আগেই জনগণ সে সুফল পাবে। এছাড়া শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, এসডিজি অর্জন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ওয়াদা ছিল। বড় বড় প্রকল্পগুলো উদ্বোধন হলেই দেশের আমূল পরিবর্তন আসবে। আগামী নির্বাচনের আগেই জনগণ এসব উন্নয়নের সরাসরি উপকার পাবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ