-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার নিজ নিজ অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর জোর দিয়েছেন সফররত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। শনিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে রাজাপাকসে এ বিষয়ের ওপর জোর দেন।
বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে গেলে রাষ্ট্রপতি তাকে স্বাগত জানান।
সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বাসসকে জানান, “শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ নিজ নিজ উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।”
প্রেস সচিব বলেন, “শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি হামিদ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে নানা ইস্যুতে একই মত পোষণ করে। দু’দেশ তথ্য-প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা পর্যটন ও সেবা খাতে যথেষ্ট উন্নয়ন করেছে। উভয় দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে এসব খাতের উন্নয়নে আরও বেশি সুযোগ তৈরী হবে। তিনি দু’দেশের বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার প্রায় ৩০ হাজার কর্মী বিভিন্ন উৎপাদনশীল ও সেবাখাতে কাজ করে। এর মাধ্যমে তারা দু’দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল ও প্রকৌশল খাতে লেখাপড়া করে। বাংলাদেশ আরও বেশি শ্রীলঙ্কান শিক্ষার্থীকে শিক্ষার সুযোগ দিতে প্রস্তুত আছে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন. “বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ও শ্রীংলঙ্কার সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের খাতগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো কাজে লাগাবার যৌথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।”
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শ্রীলঙ্কার শিক্ষামন্ত্রী জি আই পেরিস এসময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দুই দিনের সফরে শুক্রবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার শিক্ষামন্ত্রী, আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রতিমন্ত্রী, তাঁত ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী, গ্রামীণ গৃহায়ন ও গৃহ নির্মাণ সামগ্রী শিল্প প্রতিমন্ত্রী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ২৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এই সফরে প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের সঙ্গে রয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে রাজাপাকসে বঙ্গভবনের গ্যালারি হলে পরিদর্শন বইতে সই করেন।