প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের সফররত প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং এর সম্মানে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে আজ রাতে নৈশ ভোজের আয়োজন করেন। এর আগে লোটে শেরিং হোটেলে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান।
উভয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং পদস্থ সরকারী বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সেদেশের রাজার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে আজ সকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে যোগ দিতে ঢাকায় এলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধণা জানান।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং হচ্ছেন চতুর্থ বিশ্ব নেতা।
রাজকীয় ভুটান এয়ারলাইন্স দ্রুক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইট সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবতরন করে।
বিমান থেকে নামার পর প্রধানমন্ত্রী ফুলের তোড়া দিয়ে আগত অতিথিকে অভ্যর্থনা জানান। বিমান বন্দরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকষ দল ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং উভয় প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পরস্পরকে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, তিন বাহিনী প্রধানগণ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবন্দর থেকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি সাভার স্মৃতিসৌধে জানান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। শেরিং পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এবং স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল তার রোপণ করা মিমুসোপস ইলাঙ্গি ভ্যারিগাতা চারাগাছটিও তিনি পরিদর্শন করেন।
তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরে যান এবং স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি যাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং সেখানে পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে শেরিংয়ের সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর তিনি সেখানে পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তিনি সেখানে পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।
বিকেলে শেরিং সম্মানিত অতিথি হিসেবে ন্যাশনাল প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে স্বাগত জানাবেন।
‘দি ইটারনাল মুজিব’ থিম নিয়ে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী এ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সর্বশেষ বিশ্বনেতা হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬ মার্চ এখানে পৌঁছাবেন এবং ২৭ মার্চ ঢাকা ত্যাগ করবেন।
এর আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মাদ সোলিহ ও তার স্ত্রী ফাজনা আহমেদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবি ভান্ডারি ষষ্ঠ দিনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।