করোনায় নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব

সমগ্র বিশ্ব প্রাণঘাতী করোনার মহামারী নিয়ে উদ্বিগ্ন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় প্রায় ১২০টি ল্যাবরেটরিতে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। করোনা সংক্রমণের সময় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনা সংক্রমণে ফুসফুসের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ায় মানুষ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়; যদিও সংক্রমণের তীব্রতা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। আবার খাদ্যে ভেজালের উপস্থিতিতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।

গোটা বিশ্বের পরিসংখ্যানটি যদি তুলে ধরা হয়, তাহলে ৬৬০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ভেজাল খাদ্যের নেতিবাচক প্রভাবের সম্মুখীন। সমগ্র বিশ্বে ভেজাল খাদ্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৪ লাখের বেশি মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভেজাল খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। খাদ্যে বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে। ভেজাল খাদ্যে মানুষের ফুসফুসে ক্যান্সারসহ লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশে ‘ফুড সার্টিফিকেশন’ ব্যবস্থা না থাকায় ভেজাল খাদ্যে ভরপুর, যা করোনা মহামারীতে স্বাস্থ্যঝুঁকির মাত্রা ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে; যদিও বিশ্বের বহু দেশে ‘ফুড সার্টিফিকেশনের’ বিষয়টি সরকারিভাবে মনিটরিং করা হয়। এক্ষেত্রে ভোক্তা, খাদ্য উৎপাদন হতে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সরবরাহ পর্যন্ত খাদ্যের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে নিশ্চিত করা হয়।

সাধারণত ‘ফুড সার্টিফিকেশন’ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি খাদ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সরবরাহ পর্যন্ত খাদ্যের প্রকৃত মানদণ্ড বজায় রাখার ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে উৎপাদিত খাদ্য বা পণ্য উৎপাদনকারীর ডিক্লিয়ারেশনসহ ল্যাবরেটরি পরীক্ষার রিপোর্ট ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দৃশ্যমান থাকে।

বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিতকরণে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, মৎস্য ও পশুসম্পদ অধিদফতর, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান ও বিএসটিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সংরক্ষণ, লেবেলিং, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদানমুক্ত নিশ্চিতের জন্য সুনিদিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে। তবুও উৎপাদনকারীরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের নীতিমালাকে অবজ্ঞা করে প্রতিনিয়ত ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে যাচ্ছে, যা করোনা মহামারীতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

মানুষ প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি অবজ্ঞা করে খাদ্যে কেমিক্যাল মিশিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ক্যালসিয়াম কার্বাইড মিশিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক কলা ও আমসহ সব ধরনের মৌসুমি ফল পাকিয়ে বাজারজাত করা হয়। অনেক সময় ইথিলিন ও ইথিফোন দিয়েও আপেল, কলা, আম, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়।

বর্তমানে বিশ্বের বহু দেশে কৃত্রিমভাবে কেমিক্যাল মিশিয়ে ফল পাকানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবুও বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় নিয়মিত কেমিক্যাল দিয়ে ফল পাকিয়ে যত্রতত্র বাজারজাত করা হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকির মাত্রা লাগামহীনভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ক্যালসিয়াম কার্বাইড মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান। এটি খাদ্য-চেইনের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। ফলে অনেক সময় মানুষের কিডনি, লিভার ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও মানুষ অতি অল্প বয়সে খাদ্যে বিষাক্ততার উপস্থিতিতে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশের কৃষকরা ফসল উৎপাদনের সময় জমিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক প্রয়োগ করছে। কৃষকরা অধিক উৎপাদন ও মুনাফার আশায় সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের জন্য কেমিক্যাল প্রয়োগের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত প্যাথোজেন ও বিভিন্ন পতঙ্গের বায়োটাইপ পরিবর্তিত হচ্ছে। এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও বালাইনাশক কোম্পানিগুলো গবেষণার ওপর কম গুরুত্ব দিয়ে দেশের বাইরে থেকে অনেক কেমিক্যাল আমাদানি করে বাজারজাত করছে।

অনেক ক্ষেত্রে কেমিক্যাল বাজারজাতকরণে বালাইনাশক কোম্পানিগুলো কাগজে-কলমে বিধি অনুসরণ করলেও বাস্তবে অনেক অমিল পাওয়া যায়। এর ফলে কৃষকরা সুপারিশকৃত বালাইনাশক ছাড়াও জমিতে প্রচুর পরিমাণে অসুপারিশকৃত বালইনাশক ব্যবহার করছে।

কৃষকদের কীটনাশক সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকায় সুপারিশকৃত কীটনাশকের পরিবর্তে অন্য কীটনাশক ব্যবহার করায় জমিতে অনাকাঙ্ক্ষিত পতঙ্গের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে জৈব বৈচিত্র্য ও খাদ্য শৃঙ্খলের মধ্য ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি হয়। উক্ত রাসায়নিক উপাদানগুলো খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় করোনা মহামারী হতে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশে একটি ‘বালাইনাশক গবেষণা ইন্সটিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করা উচিত।

করোনা মহামারীতে আমিষের গুরুত্ব অপরিসীম। আবহমানকাল হতে মাছের সঙ্গে বাঙালির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বাঙালি জাতি আদিকাল থেকেই নদী, সাগর ও পুকুরের মাছের সঙ্গে অতি পরিচিত; যদিও বর্তমানে বিপুল জনসংখ্যার দেশে আমিষের চাহিদা মেটানোর জন্য মৎস্য চাষের বিকল্প নেই। সেজন্য মানুষ কৃষি জমিতে ফসলের পরিবর্তে অবিরত মাছ চাষ করে যাচ্ছে।

গবেষকরাও নতুন নতুন মাছের জাতের ওপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চাষের মাছের জন্য কৃত্রিমভাবে প্রচুর খাদ্য প্রয়োজন। বিভিন্ন কোম্পানি মৎস্য খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে চাষকৃত মাছের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, মাছের খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ সঠিকভাবে মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। বস্তুত মাছের খাদ্য হতে বিষাক্ত উপাদান খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এর ফলে মানুষ ফুসফুসে ক্যান্সারসহ মারাত্মক জটিল রোগের শিকার হতে পারে।

দেশে পোলট্রি খামারের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিপুল এই জনসংখ্যার দেশে আমিষের চাহিদা পূরণে পোলট্রির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু এই পোলট্রির জন্যও প্রতিদিন খাবারের প্রয়োজন। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে পোলট্রির খাবার ও ওষুধ উৎপাদন করছে, যা মুরগির রোগ কমানো ও স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যদি এসব কেমিক্যাল খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে, তাহলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে। সেজন্য এসব উৎপাদিত খাবার ও ওষুধ বাজারজাতকরণের পূর্বে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কর্তৃক সঠিক পদ্ধতিতে মান নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে আমিষের চাহিদা পূরণে ডেইরি শিল্পের গুরুত্বও অপরিসীম। বাংলাদেশে প্রায় ছোট-বড় ৫৮ হাজার ৫৯০টি ডেইরি ফার্ম রয়েছে। এসব ফার্মেও কৃত্রিম খাবারের চাহিদা রয়েছে। যদি খাবারের মান সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না হয়, তাহলে খাবারে উপস্থিত বিষাক্ত উপাদান খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের পরিবর্তে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে।

সাধারণত দুধ ও মাংস বাড়ানোর জন্য খামারে গরুর দেহে বিভিন্ন ধরনের হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। কিছু সংখ্যক ওষুধ গরুর শরীরে ‘রিসিডিউ’ হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে যায়, যা পরবর্তী সময়ে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞানসম্মতভাবে এটাও সঠিক যে, কোনো এলাকার মানুষের সুস্বাস্থ্য নির্ভর করে ওই এলাকার পশুর স্বাস্থ্যের ওপর।

যা হোক, বাংলাদেশে অনিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে শিল্পকারখানাগুলোও পিছিয়ে নেই। গবেষণায় দেখা যায়, কারখানাগুলো পণ্য উৎপাদন করার সময় দূষিত পানি ও বর্জ্য কোনো প্রকার ট্রিটমেন্ট ছাড়াই নদীতে ও কৃষিজমিতে নালার মাধ্যমে নিষ্কাশন করছে। ওই পানিতে আর্সেনিকসহ অনেক ক্ষতিকর উপাদান খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে, যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

যদিও পরিবেশ অধিদফতরের অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী, কারখানাগুলো দূষিত পানি ও বিভিন্ন বর্জ্য ট্রিটমেন্ট ছাড়া নিষ্কাশন করতে পারে না। কিন্তু বাস্তবে এক্ষেত্রে যথেষ্ট অমিল থাকায় বিষাক্ত উপাদান খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করায় মানুষ ফুসফুসে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছে।

খাদ্যে ভেজাল রোধে সরকারের পাশাপশি মানুষের সচেতনতার গুরুত্ব অনেক বেশি। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আইনের চেয়ে মানুষের নৈতিকতাই প্রধান। ফসল উৎপাদনে সমন্বিত বালাই দমনের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে প্রতিনিয়ত কৃষক ও বালাইনাশক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে।

সরকারিভাবে প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ফার্মিং প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। উক্ত ফার্মে বেকার যুবক ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিজেকে যুক্ত করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করবে, যা তাদের পরিবারের খাবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে ‘অর্গানিক পণ্য’ হিসেবে বিক্রি করবে। মৎস্য ও পশুসম্পদ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে খাদ্য উৎপাদনকারী ও খামারির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে, যাতে মৎস্য ও পশুর খাবারসহ ওষুধের মান বজায় থাকে।

অন্যদিকে, খামারি কর্তৃক উৎপাদিত মৎস্য ও পশু বাজারজাতকরণের পূর্বে গুণাগুণ পরীক্ষা করা উচিত। খামারি কর্তৃক উৎপাদিত কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য বাজারজাতকরণের পূর্বে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কর্তৃক ‘সার্টিফাইড অর্গানিক ফুড’ এবং ‘নন সার্টিফাইড ফুড’ লেবেলিংয়ের মাধ্যমে বাজারজাত করা উচিত।

এক্ষেত্রে মানুষ পণ্যের ওপর লেবেলিং দেখে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ক্রয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এ বিষয়টি অবশ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারীর নৈতিকতার ওপর নির্ভর করবে। এ নৈতিকতা নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে, যা মানবজাতিকে করোনাসহ অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত জটিল রোগের হাত থেকে রক্ষা করবে।

যদিও খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ; কিন্তু নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১ অনুযায়ী বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের ও উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতিসংঘের এজেন্ডা অনুযায়ী টেকসই উন্নয়নের উচ্চমাত্রায় পৌঁছাতে হলে বাংলাদেশকে নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাদ্য উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে।

সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ৮টি বিভাগে বিশেষায়িত ল্যাবরেটরি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেখানে খাদ্যের পুষ্টিমানসহ ভেজালের উপস্থিতি পরীক্ষা করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ করোনা মহামারীতে ‘সার্টিফাইড’ ও ‘নন সার্টিফাইড’ খাদ্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। ভেজালবিহীন ‘সার্টিফাইড খাবার’ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে করোনাসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে স্বাস্থ্য খাতেও ব্যয় সংকোচনে সাহায্য করবে।

ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম : সহযোগী অধ্যাপক, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ