জাতীয় প্রেসক্লাব আকরম খাঁ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সহযোগীতায় সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সংখ্যালঘু কৃষি ব্যাংক সিবিএ সুনামগঞ্জ জেলার আঞ্চলিক সভাপতি বিকাশ রঞ্জন সরকার এর জোরপূর্বক জমি দখল ও জমি রেজিষ্ট্রি, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, ধর্মীয় অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক উস্কনীমূলক বক্তব্য এবং মোঃ ইমরান এর জোরপূর্বক জমি দখল, গাছ কর্তন ও জোরপূর্বক মৎস আহরণের প্রতিবাদে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে ভূক্তভোগী মিথ্যা মামলা ও হয়রানীর শিকার বিকাশ রঞ্জন সরকার অন্য ভূক্তভোগী পরিবারের মোঃ ইমরান ও মাহফুজুর রহমান মিজান, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রবাল দেবনাথ অপু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লিটন কৃষ্ণ দাস, সুনামগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ হিন্দু যুব পরিষদের সভাপতি অমর চক্রবর্তী, হিন্দু যুব পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি নিপু দাস উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন যে, সংসদ সদস্য প্রতারণা করে আমার ২ একর ৫ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ২০ লক্ষ টাকার অধিক। যা পরিশোধ করবে বলে অদ্যাবদি পরিশোধ করে নাই। এ ছাড়াও আমার কাছ থেকে ৪ শতক জমি ক্রয় করে সেই দাগের ৩৭ শতক জমি জোরপূর্বক বাউন্ডারি দিয়ে জবরদখল করে রেখেছে। আমার পূর্বের জমি টাকা ও জোরপূর্বক জমি দখল বিষয়ে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকি প্রদান করে এবং বিগত ০৩/০৫/২১ তারিখে আমার উপরে তার বড়ভাই হাজী মোশারফ হোসেন মাসুদ ও তার ছেলে তানভির হোসেন সাগর কর্তৃক আমার উপরে হামলা চালায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা রজু করি, যার নং-০৩, তারিখ- ০৪/০৫/২০২১। পরবর্তীতে সে থানার প্রশাসনকে প্রভাব দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তার বড়ভাই প্রকাশে অশ্লীল ভাষায় সাম্প্রদায়িক ও উস্কানীমূলক গালিগালাজ করে এবং মালাউন বলে গালি দেয়। আরো বলে যে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে সুনুই জনমহল এলাকার শ্যামাচরণ বর্মনের মতো অবস্থা করার ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে এবং সংসদ সদস্য কর্তৃক দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
ভুক্তভোগী মোঃ ইমরান বলেন যে, সংসদ সদস্য আমাদের সরকার কর্তৃক বন্দবস্তকৃত জমি বন্দবস্ত প্রভাব খাটিয়ে বাতিল করে দিয়েছে এবং জোরপূর্বক আমার ৮০ শতক জমি দখল, জমির গাছ কর্তন ও জলাশয়ের মাছ আহরণ করে নিয়ে গেছে। এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন সময় লোকমারফত হুমকি, ধুমকি প্রদান করেছে। জমির বাবদ টাকা অথবা অন্যত্র সমমূল্যের জমি প্রদান করবে মর্মে লোকমারফত বললেও কোন প্রতিশ্রুত পূরণ করেনি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, প্রশাসনের নিকট এই বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রবাল দেবনাথ অপু বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার যাতে ন্যায় বিচার পান সে জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন যে, মাননীয় সংসদ সদস্য রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন। বিকাশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা প্রদান করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এই ধরণের মামলা খুবই নিন্দনিয়া এবং দুঃখ জনক। প্রশাসনকে প্রভাবিত করে একটি কাউন্টার মামলা করা হয়েছে। সেই সাথে এই ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যেন ন্যায় বিচার পায় সে জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদ্বারা যেন আইন ও প্রশাসন জিম্মি না হয়, সাধারণ মানুষ যেন ন্যায় বিচার পেতে পারে সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পরিশেষে ভূক্তভোগীর পরিবার ও বক্তারা সাংবাদিক বন্ধুদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে উক্ত সংবাদটি তাদের সংবাদপত্রে প্রকাশিত করে প্রশাসন ও মাননীয় প্রধনামন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করার জন্য এবং ভুক্তভোগী পরিবার যাতে ন্যায় বিচার পায় তার জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা করেন।