জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সঙ্গে সংগীতের তিন সংগঠন গীতিকবি সংঘ (এলএবি), সিঙ্গারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এসএবি) ও মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশের (এমসিএসবি) শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দেওয়া ১৭ দফা দাবির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ -এর আহবায়ক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, এমসিএসবি -এর সভাপতি নকীব খান, সিঙ্গারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর যুগ্ম আহবায়ক কুমার বিশ্বজিৎ ও হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, গীতিকবি সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল ও কবির বকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রাসেল (LAB), শওকত আলী ইমন (MCSB) ও জয় শাহরিয়ার (SAB)।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাবিহা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সভাপতি, বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ড, জাফর রাজা চৌধুরী, রেজিস্ট্রার অব কপিরাইট ও সংগীতের ১৭ দফা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক এবং ড. ললিতা রানী বর্মন, উপসচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সদস্য, বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ড।
সভার শুরুতে মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদের অকাল মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় উপস্থাপিত ১৭টি দাবির মধ্যে বেশ কয়েকটির নিষ্পত্তি ও সকল দাবির অগ্রগতি তুলে ধরেন রেজিস্ট্রার অব কপিরাইট ও বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক জাফর রাজা চৌধুরী। তিনি জানান, এখন থেকে চলচ্চিত্রের সংগীতের জন্য সৃষ্ট সংগীতকর্ম চলচ্চিত্রের জন্য সম্পাদিত চুক্তির বাইরে বিভিন্ন এনালগ ও ডিজিটাল মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ সংগীত প্রণেতারা কপিরাইট আইনের ২০ (২) ধারা মতে কপিরাইট বোর্ডে আপিল করতে পারবেন। এ ছাড়াও তিন সংগঠনের দাবি অনুযায়ী নবনির্মাণাধীন কপিরাইট ভবনে ৩টি সংগঠনের জন্য পৃথক পৃথকভাবে ৩টি অফিস স্থাপনের জন্য এক হাজার বর্গফুট আয়তনের ৩টি অফিস স্পেসের বরাদ্দ রাখা এবং ৬০ জনের বসার উপযোগী একটি পৃথক কনফারেন্স রুমেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
‘বইকে মানুষের কাছে পৌঁছাতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছুই করবে’
জাফর রাজা বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংগীতের সঙ্গে জড়িত সব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের সুযোগ সৃষ্টির দাবি ইতিমধ্যেই কার্যকর করা শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে তিন সংগঠন গীতিকবি সংঘ, সিঙ্গারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর নিবন্ধন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কপিরাইট অফিসে সম্পন্ন হয়েছে। এখন থেকে সংগীত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কপিরাইট অফিসেই নিবন্ধন করতে পারবেন।
মধ্য মেয়াদি দাবিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংগীত ব্যক্তিত্বদের জন্য এমআইপি -এর (মিউজিক ইম্পর্টেন্ট পার্সন) প্রস্তাব তিন সংগঠনের যৌথভাবে দেওয়া ৬টি মানদণ্ড পর্যালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেন। এ ছাড়াও প্রতিমন্ত্রী সরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলে গীতিকবি, সুরকার ও কন্ঠশিল্পীদের সম্মানী বৃদ্ধি, বেসরকারি এফএম. রেডিও চ্যানেলগুলোতে ফ্রিতে গান চালানোর নিষিদ্ধ ঘোষণা ও রয়েলটি ব্যবস্থা চালুর দাবির ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি যৌথ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আয়োজন করার নির্দেশনা দেন।
প্রতিমন্ত্রী সংগীতের মানুষদের অবহেলার দায় ঘোচানোর লক্ষ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে এবং প্রতি মাসে অগ্রগতি সভা করে এই ১৭ দফা দাবির মধ্যে বাকি দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।