নবীর প্রতি দরূদ পড়ার নির্দেশ আল্লাহ তায়ালা নিজেই দিয়েছেন। নবীর প্রতি দরূদ পড়ার অর্থই হলো- আল্লাহর আদেশের বাস্তবায়ন ও হুকুম পালন করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালার নির্দেশ হলো, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত-দরূদ পেশ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। ’ (সুরা আহজাব: ৫৬)
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ওপর দরূদ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার ওপর দশবার দরূদ পাঠ করবেন। ’ –সহিহ মুসলিম: ৩৮৪
কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে তার রাসূলের প্রতি দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন-
কোরআনুল কারিমে দরূদ পড়ার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন-
إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِىِّ ۚ يَٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ صَلُّوا۟ عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًا
আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবির প্রতি সালাত (রহমত) প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবির জন্য সালাত তথা রহমতের দোয়া কর এবং তার প্রতি বেশি বেশি সালাম পাঠাও।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)
জুমার দিন মুমিন মুসলমানের জন্য সেরা পাথেয় হচ্ছে বেশি বেশি দরূদ পড়া। এমনিতেই দরূদ পাঠকারীর জন্য রয়েছে সুপারিশের ঘোষণা। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা প্রমাণিত।
১. হজরত উম্মু দারদা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যা ১০ বার আমার ওপর সালাত (দরূদ) পাঠ করবে; সে কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত বা সুপারিশ পাবে।’ (মাজমাউয যাওয়াইদ)
২. হজরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি প্রিয় নবী (সা.) এর ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরূদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকেরা বলাবলি করতে থাকবে- এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ (কানজুল উম্মাল)
৩. রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থান থেকে ওঠার আগে ৮০ বার এই দরূদ শরিফ পাঠ করে-
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيْمَا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা।’
তার ৮০ বছরের গোনাহ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সাওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। সুবহানাল্লাহ! (আফজালুস সালাওয়াত)
জুমার দিনের দরূদের আমল মুমিন মুসলমানের সেরা পাথেয়। আর তা পেতে হলে এ দিন সুর্যাস্তের আগে বেশি বেশি দরূদ পড়ার বিকল্প নেই। তাছাড়া বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকেই জুমার দিনের দরূদের এ আমল প্রমাণিত।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার দিন শেষ বেলা প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়া। হাদিসের ঘোষিত ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে জুমার দিনসহ সপ্তাহের প্রতিটি দিনই বেশি বেশি দরূদ পড়ার মাধ্যমে কোরআনের নির্দেশ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। দরূদের পাথেয় রহমত ও সুপারিশ পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।