ক্রীড়া প্রতিবেদকচিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে যেসব কাণ্ড ঘটিয়েছেন, সেসবের জেরে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান- সেটা জানা গিয়েছিল ম্যাচের পরই। এরপর কেবল দেখার অপেক্ষা ছিল, কী শাস্তি দেওয়া হয় সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারকে।
শনিবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় সেই অপেক্ষা ঘুচিয়ে দিল ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটির চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ জানিয়ে দিলেন সাকিবকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করার কথা। অর্থাৎ মোহামেডানের পরবর্তী তিন ম্যাচে খেলা হবে না তার। আচরণবিধির ভাঙার অভিযোগে সাকিবকে শুধু নিষিদ্ধ করাই নয়, সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকাও জরিমানা করা হয়েছে।
ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মনপুত না হওয়ায় একাধিকবার আপত্তিকরভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান সাকিব। প্রথমবার লাথি মেরে স্টাম্প ভাঙেন তিনি। দ্বিতীয়বার স্টাম্প তুলে তা মাটিতে আছড়ে ফেলেন। এরপর মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন, তেড়ে যান আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দিকে। তার এমন কাণ্ডে তোলপাড় শুরু হয় ক্রিকেটপাড়ায়।
ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিসিডিএম চেয়ারম্যান জানান- অগ্রহণযোগ্য আচরণের জন্য শাস্তি পেতে যাচ্ছেন সাকিব। তবে কী শাস্তি দেওয়া হবে, সেটা নির্ভর করছিল ম্যাচ অফিসিয়ালদের রিপোর্টের ওপর। সেই রিপোর্ট পাওয়া গেছে, তাতে সাকিবের বিরুদ্ধে আচরণবিধির লেভেল-৩ ভাঙার অভিযোগ আনা হয়।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা আর পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদিন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসভবনের নিচে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিসিডিএম প্রধান কাজী ইনাম এমনটাই বলেছেন, ‘আমরা ম্যাচ অফিসিয়ালদের রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলাম, সেটা পেয়েছি। দুইটা অভিযোগ ছিল। একটি ৪ দশমিক ৬ ওভারে এলবিডব্লিউর আবেদন, যার প্রতিক্রিয়ায় সাকিব লাথি মেরে উইকেট ভেঙে দিয়েছেন। আরেকটা ছিল ৫ দশমিক ৫ ওভারের পর, যখন আম্পায়াররা মাঠে কভার ডাকেন এবং সাকিব উইকেট তুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন। আমরা যে রিপোর্ট দেখেছি, তাতে দুই অপরাধের জন্য লেভেল-৩ সাকিবের বিরুদ্ধে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে তার নিষেধাজ্ঞা ৩ ম্যাচ এবং জরিমানা ৫ লাখ টাকা। এই বিষয়টি এখানেই শেষ।’
বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে- নিজের অপরাধ স্বীকার করে শাস্তি মেনে নিয়েছেন সাকিব। ফলে আর কোনো শুনানির প্রয়োজন পড়েনি। অর্থাৎ এই শাস্তিই বহাল থাকছে। ফলে আজ ওল্ড ডিওএইচএসের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়াই খেলতে হবে মোহামেডানকে। শুধু এই ম্যাচে নয়, পরদিন ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষেও তাকে পাবে না সাদাকালো শিবির। সাকিবের খেলা হবে না নবম রাউন্ডের ম্যাচেও, সেই ম্যাচের সূচি এখনও জানায়নি বিসিবি।