গোপন ভিডিওর ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ, অর্থ আদায়

গোপন ভিডিওর ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ, অর্থ আদায়

রংপুর মহানগরীতে গোপনে গোসলের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম ও শাহিনুর ইসলাম শাহিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা গ্রাম থেকে আরিফুল ইসলামকে ও বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরীর বাহারকাছনা থেকে শাহিনুর ইসলাম শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার আরিফুল ইসলাম রংপুর মেট্রোপলিটনের হারাগাছ থানাধীন বাহারকাছনা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। শাহিনুর ইসলাম শাহিনের বাড়ি বাহারকাছনা মহল্লায়। তার বাবার নাম আব্দুল খালেক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ওসি রেজাউল করিম। তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আরিফুল তার খালু মজিদের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল। অপর আসামি শাহিন নিজ বাড়িতেই গোপনে অবস্থান করছিল।

গ্রেফতারের পর আরিফুলকে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হারাগাছ থানায় নিয়ে আসা হয়। পুনরায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এ মামলায় শাহিনসহ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হলো। ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত তাদেরকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলের ৩ তারিখ ওই গৃহবধূর গোসলের ভিডিও গোপনে ধারণ করে একই এলাকার আরিফুল ইসলাম। এরপর সেই গোসলের ভিডিও দেখিয়ে আরিফুল ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।

সংসার বাঁচাতে বিষয়টি গোপন রেখে জমি কেনার জন্য জমা করা ৪০ হাজার টাকা আরিফুলকে দেন ওই গৃহবধূ। একই সঙ্গে ভিডিওটি ফেসবুকে না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। এর কিছুদিন পর ফের ওই গৃহবধূকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা আদায় করে আরিফুল। ৯ এপ্রিল রাতে স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করে আরিফুল। ওই সময় চিৎকার করার চেষ্টা করলে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরদিন একইভাবে ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করে আরিফুল।

এছাড়া ধর্ষণের ভিডিওটি ফোনে ধারণ করে। পরে কয়েকজন বন্ধুকে ধর্ষণের ভিডিওটি দেখায় আরিফুল। এরপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। পরে আত্মসম্মান রক্ষায় পরিবারের লোকজন ঘটনাটি আরিফুলের পরিবারকে জানান। কিন্তু স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা বলে কালক্ষেপণ করেন আরিফুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও তার দুই চাচা।
পরে উপায় না পেয়ে ওই গৃহবধূ পরিবারের পরামর্শে গত রোববার রাতে আরিফুলসহ চারজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর আব্দুর রাজ্জাকসহ এ পর্যন্ত ওই মামলায় ৩ জন গ্রেফতার হলো।

অপরাধ তথ্য প্রুযুক্তি সারাদেশ