দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
দশমিনা উপজেলায় মহামারী করোনায় স্থগিত হওয়া প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২১জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দশমিনা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে মোট ১৫জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার বিপক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় অর্ধশত নেতা কর্মী বহিষ্কার হয়েছেন। এছাড়াও নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আজীজ মিয়া বহিষ্কার হতে পারেন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
দলীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দশমিনা উপজেলায় প্রথম ধাপে আগামী ২১ জুন তিনটি ইউনিয়নে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আলীপুর ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান ও বহরমপুরে মো. আনোয়ার হোসেন মৃধা এবং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে কাজী আবুল কালাম নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম ধাপের এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী বিজয়ী করতে প্রচারণায় তৎপর রয়েছে। একই সঙ্গে অর্থের মোহে ও অত্মীয় সুবাদে নৌকার বিপক্ষে একাধিক নেতাকর্মী প্রতি ইউনিয়নে গোপনে এবং প্রকাশ্যে প্রচারণায় লিপ্ত থাকার খবরও পাওয়া গেছে।
জনপ্রিয় প্রার্থী খুঁজছে আওয়ামী লীগ
আলীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন সরদার বলেন, ‘আলীপুর ইউনিয়নে স্বাধীনের পর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়ে আসছে। এবারও বিজয় নিশ্চিত। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কতিপয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করায় নৌকা পরাজয় হতে পারে।’ বহরমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেগ সা.সম্পাদক মো. মাহাবুব হাওলাদার জানান, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল আজিজ মিয়া ফোন করে তার ভাতিজার সোহাগের (ঘোড়া প্রতীক) পক্ষে কাজ করার কথা বলেন, ‘আনোয়ারতো (নৌকার প্রার্থী) হতে পারবে না, সোহাগের তো (তার ভাতিজা) ভালো সমর্থন দেখি।’ বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীক প্রার্থীর ভাই কাজী আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, ‘নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত কতিপয় নেতাকর্মীদের ভুল বোঝাবুঝি ছিলো।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির চেষ্টায় এখন সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। মাঠে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে সবাই।’ উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি মোসা. ফাতেমা আলমগীর বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজীজ নেতাকর্মীদের কাছে ফোন করে তারই আপন ভাতিজা মো. আসাদুজ্জামান সোহাগের ঘোড়া প্রতীকে ভোট চান। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন নৌকা প্রতীক বিজয় করতে দিন-রাত প্রচারণার কাজ করছে। নৌকার বিজয় নিশ্চিত, তবে নৌকা হেরে গেলে উপজেলা সভাপতির কারণেই হারবে। উপজেলা সভাপতি ভাতিজার ভোট চাওয়ার বিষয়ে বহু নেতাকর্মী জেলা আ’লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেনের কাছে অভিযোগ করেছেন।’
ফরিদপুর আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব নিরসনের নির্দেশ শেখ হাসিনার
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহমুদ লিটন বলেন, ‘নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীদের নৌকার হয়ে কাজ করার আহ্বান করা হয়েছে। আলীপুর ও বহরমপুর ইউনিয়নে প্রকাশ্যে ও গোপনে নৌকা বিরোধী আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের অর্ধশত নেতা কর্মীকে এতিমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ২১ জুন নির্বাচনের আগে নিজেকে নৌকার পক্ষে কাজ করে প্রমাণে ব্যর্থতায় ২২ জুন তার বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজ ইত্তেফাককে বলেন, ‘নৌকার পক্ষের কিছু নেতা আমার বিপক্ষে মিথ্যাচার করছে। আমার ভাতিজা সোহাগের (ঘোড়া প্রতীক) পক্ষে ভোট চাওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।’