দেশে একটিমাত্র মূল দল রয়েছে সেটি হলো আওয়ামী লীগ ;শেখ হাসিনা

দেশে একটিমাত্র মূল দল রয়েছে সেটি হলো আওয়ামী লীগ ;শেখ হাসিনা

রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে চিন্তা করলে এ দেশে একটিমাত্র মূল দল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা। সেটি হলো আওয়ামী লীগ।

২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার বিকেলে দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন দলটির সভাপতি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতকর্মীরা প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আমরা যদি শহীদের তালিকা দেখি কটা মানুষ জীবন দিয়েছে এদেশের জন্য, একমাত্র আওয়ামী লীগই। আর একটা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আমরা যদি হিসেবে করে দেখি তাহলে এ দেশে কটা রাজনৈতিক দল আছে?

‘অনেকে অনেক কথা বলেন। আমরা যদি জনগণের সংগঠন হিসেবে দেখি, গণমানুষের সংগঠন হিসেবে দেখি, তৃণমুলের মানুষের দ্বারা রচিত একটি সংগঠন, সেটি কিন্তু আওয়ামী লীগ। সেই সাথে আমাদের আরও পার্টি আছে যেমন কমিউনিস্ট পার্টি বা অন্যান্য পার্টিগুলি আছে, ছোটখাটো। কিন্তু মূল একটি সংগঠনই সেটা হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।’

তিনি বলেন, ‘এর বিপরীতে যে দলগুলো যারা খুব আহাজারি করে তাদের কীভাবে জন্ম? পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে…নিজেদের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। ক্ষমতা দখল করে আর্মি রুলস অ্যাক্ট সব বাদ দিয়ে, সংবিধান লঙ্ঘন করে নিজেদের ঘোষণা দিয়ে তারপর আবার রাজনীতিতে অবতরণ করে।’

‘তখন ক্ষমতায় বসে সেই মার্শাল ল জারি অবস্থায় যে দল তৈরি করে সেটাই একটা হলো বিএনপি আর একটা হলো জাতীয় পার্টি। এখন বিএনপি জাতীয় পার্টি তো জনগণের মধ্য থেকে উঠে আসে নাই বা জনগণের জন্য কাজ করেও উঠে আসে নাই। ক্ষমতা দখলকারীর হাতে সৃষ্টি হওয়া একটি দল। আমি মনে করি যারা সমালোচনা করেন তাদের এটি মনে রাখা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইয়ুব খান যে পদ্ধতিতে ক্ষমতায় এসেছিল, একইভাবে জেনারেল জিয়াউর রহমানও ক্ষমতায় আসে, জেনারেল এরশাদও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে। কিন্তু এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে যারা রক্ত দিয়েছে সংগ্রাম করেছে তারা হলো আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। আর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এ সংগ্রাম করেছে বলেই আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। আজকে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন সেটাও যদি সেটাও কিন্তু এই আওয়ামী লীগের হাতেই।’

আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘তার কারণ একটাই। যেহেতু আওয়ামী লীগ এ দেশের গণমানুষের সংগঠন, মানুষের বঞ্চনা-শোষণ তারা দেখেছে। মানুষের কষ্ট দুঃখ তারা উপলব্ধি করেছে। এই কষ্ট দুঃখ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যই কিন্তু আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আওয়ামী লীগ যখনই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে এই বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যই পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে যদি বিবেচনা করা যায় তাহলে এখানে কিছু বাম দল আছে, কিছু দক্ষিণপন্থি আছে। কিন্তু সত্যিকারের গণমানুষের দল হিসেবে বাংলাদেশের জন্য একমাত্র দল আওয়ামী লীগ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকে অনেক কিছু বলেন কিন্তু এই জিনিসটা কখনো উপলব্ধি করেন না। করবেন কী করে? এদেশে যদি একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বা যখন কোনো অরাজনৈতিক অথবা অগণতান্ত্রিক সরকার আসে তখন তাদের মূল্যটা বারে। কেউ কেউ পাবার আশায় বসে থাকে। এ কারণে তারা এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না। তারা ক্ষমতার পেছনে ছুটেন। পদলেহন করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যা করে জনগণের কল্যাণে করে।’

দেশের পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এ বছর ৭২ বছর পূর্ণ করলো। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেন ভবনে জন্ম হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের। পরে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের রাখা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সে সময় প্রতাপশালী মুসলিম লীগের সঙ্গে লড়াই করে দলটিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের পর জাসদ, এরপর জিয়াউর রহমানের সেনাশাসন, পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সেনাশাসন এরপর বিএনপির সঙ্গে লড়াই, প্রতিযোগিতা করে আজকের অবস্থানে এসেছে দলটি।

জাতীয় রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ