দেশে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ, মৃত্যু ও শনাক্তের হার। ঢাকার আশপাশের জেলাসহ দেশের অনেক স্থানে ‘লকডাউন’ চললেও প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুতেই কমছে না। সীমান্ত এলাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু।
করোনার ঢেউ রাজধানীতেও আছড়ে পড়ছে। ঢাকাতে প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন রোগী। হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে করোনা রোগীর ভিড়। নমুনা পরীক্ষার হারও বাড়ছে ঢাকায়। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) ২০৬৪ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে।
নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সোমবার শনাক্ত হয়েছিল ১০২৯৪ জন। শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় চার শতাংশ। একই সময়ে রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর সাধারণ শয্যায় শতাধিক নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আইসিইউতে ভর্তি হয়েছে ২১ জন নতুন রোগী।
শুধু ঢাকা নয়, রাজধানীর আশপাশের যেসব জেলায় লকডাউন চলছে সেখানেও সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। সোমবার গাজীপুরে সংক্রমণের হার ছিল ১৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় নারায়ণগঞ্জে শনাক্তের হার ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। সোমবার এ হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এদিকে সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৭২৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যা আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ১৩ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি ৬০২৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। আগের দিন শনাক্ত হয়েছিল ৪৮৪৬ জন।
এ নিয়ে দেশে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৭। একদিনে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৩৬ জন মারা গেছেন।
সোমবার সারা দেশে মারা যায় ৭৬ জন। সবমিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৮৭ জন। সরকারি হিসাবে একদিনে আরও ৩১৬৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫৫৩ জন। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫৫৪টি ল্যাবে ২৮ হাজার ২৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৬৪ লাখ ৫ হাজার ৭৫ টি নমুনা। নুমনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৭ শতাংশ, এই পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৩১ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের ৫৫ জন পুরুষ আর নারী ৩০ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬৫ জন সরকারি হাসপাতালে, নয়জন বেসরকারি হাসপাতালে ও ১০ বাড়িতে মারা যান। একজনকে হাসপতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাদের মধ্যে ৪৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ১০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, সাতজন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৮ রাজশাহী বিভাগের, ৩৬ জন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের, একজন রংপুর বিভাগের ও তিনজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।