রাজধানীতে ১ হাজার ৬৪৬টি বাস রুট পারমিট ছাড়া চলাচল করছে। এসব অবৈধ বাসের বিরুদ্ধে পহেলা জুলাই অভিযান পরিচালনা করবে ঢাকার দুই সিটি ও বিআরটিএ। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ অভিযান। বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ীয়ার ডিএসসিসি নগরভবনে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৭তম সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে কোম্পানির অধীনে বাস চলাচল প্রসঙ্গ। করোনার কারণে এ কাজের অগ্রগতি থমকে যাওয়ায় নতুন করে কার্যক্রম জোরদার করার তাগিদ দেওয়া হয়। ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এ রুটে কোম্পানির অধীনে বাস চলাচল করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর ১৪তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ এপ্রিল ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে কোম্পানিভিত্তিক বাস চলাচল শুরুর কথা ছিল।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, রাজধানীর গণপরিবহণে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যানজট নিরসনে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে রাজধানীর সব রুটে এ পদ্ধতিতে বাস চলাচল করবে।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানীতে ১ হাজার ৬৪৬টি বাস রুট পারমিট ছাড়া চলছে। এটা বন্ধে আগামী মাস থেকে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। দুই সিটি ও বিআরটিএ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, ঘাটারচরে একটি বাস ডিপো নির্মাণ করার জন্য আমরা দুটি জায়গা পরিদর্শন করেছি। সেখানে প্রায় ১২ বিঘার মতো জায়গা শনাক্ত করেছি। সেই জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে বাস ডিপো নির্মাণ করব। এছাড়া যাত্রীদের জন্য বাস-বে নির্মাণের ব্যাপারেও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, কোম্পানিভিত্তিক যারা বাস পরিচালনা করবেন, তাদের সঙ্গে খসড়া চুক্তি করা হয়েছে। সে চুক্তি সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে। ৮ জুলাইয়ের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত করতে বাস মালিকপক্ষ ও বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৯ জুলাই সেটা চূড়ান্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার বাইরে চারটি জায়গায় আন্তঃজেলা বাসগুলোর জন্য টার্মিনাল ও ডিপো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে কার্যক্রম যেন দ্রুত করা যায়, সেজন্য আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেল জমা দেওয়া হয়েছে। টার্মিনালগুলোর নির্ধারিত জায়গার মধ্যে রয়েছে- হেমায়েতপুর, ভাটুরিয়া, বাঘাইর ও কেরানীগঞ্জ। এসব বাস কোম্পানিভিত্তিক পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করেছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার গণপরিবহণের মালিক দুই হাজারের বেশি। ঢাকা ও আশপাশের ২শর অধিক রুটে বাস চলাচল করে। যাত্রী নেওয়ার জন্য এক বাসের চালক অন্য বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের জন্য ২০০৪ সালে ঢাকার জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশন চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য লক্কড়ঝক্কড় বাস তুলে দেওয়া, সহজ শর্তের ঋণে নতুন বাস নামানো। এ পদ্ধতিতে পুরো ঢাকায় বাস চলবে কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে। মালিকরা বিনিয়োগের হার অনুসারে লভ্যাংশ পাবেন।