নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনার ডেলটা ধরনকে শুরুতে ভারতীয় ধরনই বলা হতো। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে করোনার ধরনটির নতুন নাম দেওয়া হয় ‘ডেলটা ভেরিয়েন্ট’। গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম করোনার এই ধরন শনাক্ত হয়। করোনার এ ধরন অতি সংক্রামক। দ্রুত একজনের কাছ থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মূলত এ ধরনের কারণে গত এপ্রিল ও মে মাসে ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নেয়।
গত ৮ মে জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএআইডি) বাংলাদেশে করোনার এই ধরন শনাক্তের খবর দেওয়া হয়। এর নমুনা সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। সেখানে বলা হয়, গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল সংগৃহীত নমুনা থেকে ডেলটা ধরন মেলে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে এ ধরন পাওয়া যায়।
তখন আইইডিসিআর সূত্র জানায়, ভারতে ভ্রমণ করে আসা কারও শরীরে এই ভেরিয়েন্ট (ধরন) পাওয়া গেছে।
আজ আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, গত মে ও জুন মাসে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে ৮০ শতাংশের মধ্যে ডেলটা ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে। ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে সাউথ আফ্রিকার ভেরিয়েন্ট এবং বাকিদের মধ্যে অন্য ক্রিয়াশীল ধরন পাওয়া গেছে।
দেশের প্রায় সব এলাকা থেকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে শুরু করে। পরে তা আশপাশের জেলাগুলোয়ও ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮ হাজার ৩৬৪ জনের করোনা শনাক্তের খবর জানানো হয়। এক দিনে রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে এটাই ছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ সংখ্যা। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১১৯ জনের। দেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ছিল এটা।
আর সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭ হাজার ৬৬৬ রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬। এদের মধ্যে সবশেষ এক লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে এক মাসের কম সময়ে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত সোমবার সকাল থেকে সারা দেশে সব গণপরিবহন ও মার্কেট-শপিং মল বন্ধ করা হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার শুরু হবে সর্বাত্মক লকডাউন, বন্ধ থাকবে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসও।