আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেক এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। মারা গেছেন ৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত মাটি, গাছপালা, পচনশীল ফল ও শাকসবজিতে এই ছত্রাক দেখা যায়। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) জানিয়েছে, মিউকরমাইকোসিস মুখে আক্রমণ করতে পারে। নাক, চোখ ও মস্তিষ্কে এর সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সংক্রমণে সাইনাসের ব্যথা, এক নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথার এক পাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া, দাঁতে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রমণে রোগী দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন।
আরও পড়ুন
করোনার মধ্যে ভারতে নতুন মহামারি ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’
এআইআইএমএস আরও জানিয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ মস্তিষ্ক ও ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষত ডায়াবেটিস রয়েছে—এমন কোভিড পজিটিভ রোগীদের এই ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কেননা স্টেরয়েডের অপব্যবহার কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার ১২ থেকে ১৮ দিন পরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। চিকিৎসকেরা জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে লড়তে একমাত্র চিকিৎসা ছত্রাক–প্রতিরোধী ইনজেকশন।
আরও পড়ুন
দিল্লিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি রোগ ঘোষণা
রাজধানী দিল্লি ছাড়াও তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্ণাটক, ঝাড়খন্ডসহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে প্রাণঘাতী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে মিউকরমাইকোসিসে সংক্রমিত হয়ে ১ হাজার ৭৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর চক্ষু চিকিৎসক রঘুরাজ হেগড়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত বেশ কয়েকজন রোগীর চিকিৎসা করেছেন। তাঁর মতে, ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ও তাতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে আরও বেশি হতে পারে। বিবিসিকে তিনি বলেন, সাধারণত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পরে রোগীর মৃত্যু হয়। ভারতের বর্তমান ব্যবস্থা এই সংখ্যা নিরূপণে যথার্থ নয়।
আরও পড়ুন
ভারতে এখন ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের’ ওষুধের সংকট
এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার ছোট হাসপাতালগুলোয় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্তের কোনো ব্যবস্থা নেই। থাকলেও অনেক কাঠখড় পেরোতে হয়। শুধু বড় শহরগুলোর হাসপাতালে শনাক্ত রোগীদের হিসাব দিয়েছে সরকার। অনেক রোগী আছেন, যাঁরা হাসপাতালে এসে রোগ শনাক্তের আগেই মারা গেছেন।