১৮ বলে দরকার ২৮ রান। মায়ার্সের ওভারের শেষ তিন বলে চার হাঁকিয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের মুঠোয় নিয়ে আসেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। শেষটাও করেন তিনি। ৬ বলে দরকার যখন ৫। প্রথম বলেই সপাটে চার। পরের বলে সিঙ্গেল। নবাগত শামীমের হাত ধরেই বলতে গেলে রোমাঞ্চের এক জয় পেল বাংলাদেশ।
রোববার হারারেতে তৃতীয় ও শেষ টি টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দারুণ জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও জিতল বাংলাদেশ।
আগে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে জিম্বাবুয়ে। জবাবটা ভালোমতো দিয়েছে বাংলাদেশও। ৪ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌছায় টাইগার শিবির। টি টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ সিরিজ জয়।
জিততে হলে করতে হবে ১৯৪ রান। সে লক্ষ্যে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ২০ রানের মাথায় বিদায় নেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। সাত বলে মাত্র তিন রান করে তিনি মুজারাবানির শিকার। এরপর সৌম্য ও সাকিব দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন।
বেশ মারমুখি ছিলেন সাকিব। আর তাতেই যেন ভুল শট খেলে ফেললেন। দলীয় ৭০ রানে বাংলাদেশ হারায় দ্বিতীয় উইকেট। ১৩ বলে এক চার ও দুটি ছক্কায় ২৫ রান করে জংউইর বলে মুসাকান্দার হাতে ক্যাচ দেন সাকিব।
এরপর অবশ্য অধিনায়ক মাহুমদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে রসায়নটা দারুণ জমে যায় সৌম্য সরকারের। বাহারি শটে এগিয়ে যেতে থাকেন সৌম্য। এক পযায়ে পৌছে যান টি টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটিতে। ৪০ বলে চারটি চার ও এক ছয়ে পঞ্চম স্পর্শ করেন সৌম্য।
ফিফটির পরও সাবলিল ছিলেন সৌম্য। ইনিংসটা আশির ঘরে গেলে স্বস্তি পেত বাংলাদেশ। কিন্তু হয়নি। ব্যক্তিগত ৬৮ রানে তিনি জংউইর বলে ক্যাচ দেন মুসাকান্দার হাতে। ৪৯ বলের ইনিংসে সৌম্য হাকান নয়টি চার ও একটি ছক্কা। ১৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন তিন উইকেটে ১৩৩ রান।
মাহমুদউল্লাহর নতুন সঙ্গী তখন আফিফ হোসেন। নেমেই প্রথম বলে হাকান তিনি ছক্কা। পরে হাকান আরও একটি ছক্কা। ভাগ্য খারাপ। ইনিংস বড় করতে পারেননি। স্টাম্প ছেড়ে হাকাতে গিয়ে মাসাকাদজার বলে বোল্ড তিনি। ৫ বলে তার সংগ্রহ ১৪।
এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হন দ্বিতীয় ম্যাচে অভিষেক হওয়া শামীম পাটোয়ারি। একটু আগেই নামানো হয় তাকে। এই জুটিই দলকে নিয়ে যায় জয়ের কাছাকাছি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ৩৭ রান, মাত্র ১৯ বলে। জয় থেকে সামান্য দূরে থাকতে আউট হন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উইকেটের পেছনে দারুণ ক্যাচ নেন চাকাভা। ২৮ বলে দুটি চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।
শেষটা করেন বলতে গেলে শামীম হোসেনই। তার সঙ্গে ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। মাত্র ১৫ বলে তিন চার ও দুই চারে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন শামীম। আগের ম্যাচে ১৩ বলে ২৯ রান করেছিলেন শামীম। ৪ বলে এক রানে অপরাজিত থাকেন সোহান।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের নাভিশ্বাস করে তোলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। পাওয়ার প্লে থেকে শুরু করে ইনিংসের শেষ ওভার পযন্ত। সবাই ছিলেন মারমুখি। লক্ষ্য একটাই, বড় স্কোর। আর সেটাতে সফল তারা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে তারা করে ১৯৩ রান।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার মারুমানি ও মাধেভেরে। পাওয়র প্লের ৬ ওভারে দলটি তোলে ৬৩ রান, বিনিময়ে যায় একটি উইকেট।
৩৬ বলে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন মাধেভেরে। চার হাকান ছয়টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে চাকাভার ব্যাট থেকে। ২২ বলে তিনি করেন ৪৮ রান। তিনি বাউন্ডারি হাকাননি। তবে ছক্কা হাকিয়েছেন ছয়টি।
শেষের দিকে ১৫ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন রায়ান বার্ল। ২১ বলে ২৩ রান করেন ডিওন মায়ার্স। ওপেনার মারুমানি ২০ বলে করেন ২৭ রান। তিনি সমান দুটি করে চার ও ছক্কা হাকান।
বাংলাদেশের হয়ে পার্ট টাইম বোলার সৌম্য সরকার নেন দুটি উইকেট। সাকিব, শরিফুল ও সাইফউদ্দিন নেন একটি করে উইকেট। ৪ ওভারে সর্বোচ্চ ৫০ দেন সাইফউদ্দিন।