নিজস্ব প্রতিবেদক
এর আগে গত জুনে দেশে ‘এক দেশ, এক রেট’ কর্মসূচির আওতায় ৫০০ টাকায় সারা মাসের ইন্টারনেট সেবা উদ্বোধন করা হয়। তখন সেবাদাতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালনে ব্যয় না কমলে তাদের পক্ষে এই দামে সেবা দেওয়া কঠিন।
ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালনের ব্যয় বেঁধে দেওয়ার সুফল কী হবে জানতে চাইলে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মোটামুটি কাছাকাছি দামে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ব্যান্ডউইডথ কেনা যাবে। এতে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় কমবে। সাধারণ মানুষ বিটিআরসির নির্ধারিত দামে ভালো মানের ইন্টারনেট পাবে। তিনি বলেন, এই মূল্যকাঠামো ঠিক করার বিষয়টি জটিলতার মধ্যে পড়েছিল। পরামর্শক নিয়োগ করে অনেক অর্থ ব্যয় করেও কাজ হয়নি। এবার সমাধান হলো। তবে কিছু সমস্যা আছে। তা আলোচনা করে সমাধান করা যাবে।
বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সব ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি), বেসরকারি নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) জন্য এই নতুন মূল্যকাঠামো। নতুন কাঠামোর আওতায় এনটিটিএন অপারেটরদের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৬টি প্যাকেজের প্রতি এমবিপিএস ডেটা সঞ্চালনের জন্য ১৩ থেকে ৩০০ টাকা, জেলা থেকে জেলায় ১৫টি প্যাকেজের জন্য ১৩ থেকে ৩০০ টাকা এবং দূরবর্তী অঞ্চলের ১৫টি প্যাকেজের জন্য ২৫ থেকে ৫০০ টাকা ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকসেবার মান নিশ্চিতে ৫টি গ্রেড (এ, বি, সি, ডি ও ই) চালু করা হয়েছে।
বিটিআরসির লাইসেন্সধারী সব বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের মোট ১১টি প্যাকেজের জন্য সারা দেশে সঞ্চালন ব্যয়সহ ৩৩০ থেকে ৩৯৯ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সেবার মানদণ্ড নির্ধারণে ৩টি গ্রেড (এ, বি ও সি) চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে জানিয়ে মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রেও শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিটিআরসির প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, কমিশনার মো. মুহিউদ্দিন আহমেদ, আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন, এ কে এম শহীদুজ্জামান, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবির, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্স বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের মহাপরিচালক মো. মেসবাহুজ্জামান এবং বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল মতিন ও আইআইজি ফোরামের মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ভবিষ্যতে প্রতিটি জেলায় পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (পপ) স্থাপিত হলে গ্রাহক মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন সেবা পাবে। তিনি আগামী ২৬ মার্চ থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ৫ এমবিপিএসের খরচে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর ঘোষণা দেন।