ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় সরকারের করণীয় নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমাসহ মালিকদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের পদ্ধতি নির্ধারণ করবে এ কমিটি। এছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের লেনদেন তদারকি, ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতায় আনা, লাইসেন্সের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে গঠিত ১৫ সদস্যের কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হয়েছে একই মন্ত্রণালয়ের সংশ্নিষ্ট যুগ্ম সচিবকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিরা। এছাড়া পুলিশ হেডকোয়ার্টারস, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে কমিটিতে। প্রতিনিধি হিসেবে আরও রাখা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে থাকা বিএফআইইউ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার ও কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের একজন করে। সব ক্ষেত্রে অন্তত যুগ্মসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে বলা হয়েছে।
ই-কমার্সের প্রতারণা বন্ধে নতুন আইন প্রণয়ন এবং কারিগরি পরামর্শের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দুটি কমিটি গঠন করেছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে একটি কারিগরি কমিটি করা হয়। এই কমিটি সময়ে-সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন পরামর্শ দেবে। এছাড়া নতুন আইন প্রণয়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত অপর কমিটিও এখন কাজ করছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত কমিটির আটটি কার্যপরিধি উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে। সেখানে বলা হয়, অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের তথ্য এবং মালিকানাধীন সম্পদের বিবরণ, ব্যাংক হিসাবের স্থিতিসহ হালনাগাদ তর্থ্য সংগ্রহ করে তা উদ্ধারের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় করণীয় ঠিক করতে হবে। ই-কমার্স সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর বা সংস্থাকে একই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনার মাধ্যমে আন্তঃযোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের আওতায় আনা, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও পরিবীক্ষণের জন্য ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ, এসব প্রতিষ্ঠানের সব আর্থিক লেনদেন তদারকির আওতায় আনা, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতায় আনার বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেবে এ কমিটি। আগামী এক মাসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।