মো. আখতারুজ্জামান : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পণ্যের দাম নিয়ে আমরা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে। আর রাজধানীর শ্যামবাজারে পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য যদি ৪০ টাকা হলে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে ৫৫ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। সেইসঙ্গে উপস্থিত বাণিজ্য সচিবকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ প্রদান করেন।
সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ শীর্ষক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে রোববার ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
দেশের বাজারে বয়লার মুরগী, ডিল ও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখীতার বিষয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমরা সীমা লঙ্খন করতে চাই না। চাল ও মুরগী আমার মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। এ নিয়ে আমি কিছু বললে কৃষিমন্ত্রী বলবেন খাদ্য বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী কিছু বলতে পারে না। কারণ এ বিষয়ে আমার কিছু বলার অধিকার নেই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এ আয়োজন পিপিপি মডেলের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত, যা বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুুতি ও নীতি সহায়তার বিষয়সমূহ তুলে ধরবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, যার সুবিধা নিয়ে আমাদেরকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণে পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হবো। সে পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদেরকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। এলক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সম্ভাব্য দেশগুলোর সাথে এফটিএ, পিটিএ স্বাক্ষরসহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বাণিজ্য সম্মেলন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হবে, যা আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। আমাদের রপ্তানিখাত বেশিমাত্রায় তৈরি পোষাক নির্ভর, এখন সময় এসেছে অন্যান্য খাতগুলোকে নিয়ে কাজ করা এবং বাণিজ্য সম্মেলনে সম্ভাবনাময় ৯ খাতের উপর আলোকপাত করা হবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ভার্চুয়াল বাণিজ্য সম্মেলনটি বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের নিকট কোভিড মহামারীকালীন সময়েও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রস্তুুতির বিষয়সমূহ তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, এ বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশ সহ বিশে^র ৩৮টি দেশের সর্বমোট ৫৫২টি কোম্পানী সপ্তাহব্যাপী ৪৫০টি বিটুবি’তে অংশগ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। ৬টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে। যেখানে সংশ্লিষ্ট খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন।
বৈশি^ক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অধিকতর অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এই সামিটের আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর-২০২১ তারিখের সাত দিনব্যাপী এই সামিটে বাংলাদেশসহ ৩৮টি দেশের ৫৫২টি কোম্পানী সপ্তাহব্যাপী ৪৫০টি বিটুবি’তে অংশগ্রহণ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমপি এই সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করবেন।
ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অবকাঠমো, আইটি বা আইটিইএস এবং ফিনটেক, লেদারগুডস, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোটিভ অ্যান্ড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, এগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল, এফএমসিজি অ্যান্ড রিটেইল বিজনেস প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে বাণিজ্য সম্মেলনে আলোকপাত করা হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনটি সরকার ও বেসরকারীখাতের সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যার মাধ্যমে ৫ মহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তাদের বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে বর্হিবিশে^ বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে, যার মাধ্যমে আরো বেশি হারে বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএ, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।