এক হাজার টনের ফেরি উদ্ধারে ৬০ টন সক্ষমতার হামজা

এক হাজার টনের ফেরি উদ্ধারে ৬০ টন সক্ষমতার হামজা

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ১৪টি ট্রাক ও ১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ডুবে গেছে এক হাজার টন ওজনের রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরিটি উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা উদ্ধার তৎপরতায় নেমেছে। তবে হামজার উদ্ধার ক্ষমতা রয়েছে ৬০ টন। ফেরি আমানত শাহর যে ওজন তাতে হামজা কোনো কূলকিনারা পাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এদিকে আরেকটি উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে প্রত্যয়- যার উদ্ধারের সক্ষমতা ২৫০ টন।

বুধবার সকালে দৌলতদিয়া থেকে আসার পর পাটুরিয়া ৫নং ঘাটের কাছে ফেরিটি ডুবে যায়। তবে এতে কোনো যাত্রী বা পরিবহণ শ্রমিক নিখোঁজের খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিট উদ্ধার কাজ শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ১০টি ট্রাক ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা অঞ্চলের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা জানান, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি টিম কাজ করছে। এছাড়া কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।

ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ ফেরিটি ৪২ বছরের পুরনো। ডুবে যাওয়া ফেরি আমানত শাহ ১৯৭৯ সালে আরিচা ফেরি সেক্টরে যোগ হয়। ফেরির মাস্টার শরিফুল ইসলাম লিটন জানান, ৪ মাস আগে ফেরিটি নারায়ণগঞ্জ থেকে ভারি মেরামত শেষে পাটুরিয়া সার্ভিসে আসে। তবে সম্প্রতি ফেরিটির তলদেশে একটি ফুটো হয়। সেটি মেরামত করার কথা ছিল। সেই ফুটো দিয়েই ফেরির ভেতরে পানি প্রবেশ করে বলে দাবি ট্রাক চালকদের।

প্রত্যক্ষদর্শী ফেরির যাত্রী আবদুর রাজ্জাক জানান, ডুবে যাওয়া ফেরি আমানত শাহ-এ পানি উঠতে শুরু করে মাঝ নদী থেকেই। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরিটি যখন মাঝ নদীতে পৌঁছায়, তখনই সামনের দিকে ডান পাশে থাকা একটি ছিদ্র দিয়ে পানি উঠতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে ফেরির ভেতর পানি জমে যায়। এ সময় পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ ১৭টি গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিল ফেরিতে।

তিনি বলেন, ফেরিতে পানি উঠতে দেখে স্টাফসহ যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন। তখন ফেরির মাস্টার ইঞ্জিনের গতি বাড়িয়ে দেন। অল্প সময়ের মধ্যে ফেরিটি পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে পৌঁছায়। পন্টুনের সঙ্গে রশি না বাঁধতেই ফেরির ডালা নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় দুটি ট্রাক ফেরি থেকে নেমে যায়। আরেকটি ট্রাক অর্ধেকটা নামার পরইপরই ফেরি কাত হয়ে যায়। এ সময় ট্রাকটি পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যায়।

আরেক ট্রাকচালক আমির হোসেন জানান, তিনি সারা রাত গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন। গাড়ি ফেরিতে তোলার পরই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। তার গাড়ি যখন পদ্মায় ডুবে যায় তখনই আচমকা জেগে উঠেন তিনি। পরে নদীতে থাকা একটি ট্রলারের সহায়তায় তীরে ওঠেন।

Others সারাদেশ