ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার রাজধানীর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল সরকারকে পৃথক চার মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে মামলাগুলো আগামী এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ। জয় গোপালের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট জয় গোপাল সরকারকে পৃথক চার মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওইদিন এ রায় দেন।
জয় গোপাল সরকার অবসরে গিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, পরে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হন।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় এনু-রুপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। তাঁদের বাসায় টয়লেটে সোনার কমোড পাওয়া যায়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। এরপর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে পাঁচ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, আট কেজি স্বর্ণালংকার ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র্যাব। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে জয় গোপাল সরকারের নাম উঠে আসায় একই বছরের ১৪ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। এর পর ২০১৯ সালে গেণ্ডারিয়া, সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানায় হওয়া পৃথক চার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেণ্ডারিয়া থানায় ওই বছরের ২৫ মে একটি (মামলা নম্বর ২৮), সুত্রাপুর থানায় ২৬ সেপ্টেম্বর দুটি (মামলা নম্বর ২৭ ও ২৯) এবং ওয়ারী থানায় ২৫ সেপ্টেম্বর একটি (মামলা নম্বর ৩৪) মামলা করা হয়। গত বছরের ২২ জুলাই এসব মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় ১৬ জন, সূত্রাপুরের দুটি মামলায় ১৫ ও ১০ জন করে এবং ওয়ারী থানার মামলায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জয় গোপাল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন ফুটবলার ছিলেন। অবসরে গিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, পরে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে এনু-রুপনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন।