‘দুই শতাধিক’ পিকআপ চুরি, সঙ্গে নিয়েছেন স্ত্রীকেও

‘দুই শতাধিক’ পিকআপ চুরি, সঙ্গে নিয়েছেন স্ত্রীকেও

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই চক্রের কৌশল হচ্ছে, চুরির পর গাড়ির মালিককে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করা। চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে পিকআপ ভ্যান চুরি করছেন।

ডিবি জানায়, কদমতলী থানার একটি মামলার তদন্তে এই চক্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। চুরির পর চক্রের সদস্যরা নামে-বেনামে নিবন্ধন করা মুঠোফোনের সিম ব্যবহার করে গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে মালিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নেন। যদি ভুক্তভোগী ব্যক্তি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান, তবে ওই গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে দেন তাঁরা। অভিযানে পাঁচটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিবির ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজিজুল লেখাপড়া করেননি। তবে তিনি খুবই ধূর্ত। দুই শতাধিক পিকআপ ভ্যান চুরি করেও তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। যে মুঠোফোন ব্যবহার করে তিনি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, ওই নম্বর দিয়ে তিনি ব্যক্তিগত যোগাযোগ করেন না। বিকাশ ও নগদের অ্যাকাউন্টও করা হয়েছে বেনামে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও গ্যারেজ থেকে মিনি পিকআপ চুরি করে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ‘মাস্টার কি’ ব্যবহার করেন। তাঁরা মূলত গভীর রাতে গাড়ি চুরি করেন। চুরির কিছুক্ষণ পরে গাড়ির মালিককে ফোন করে তাঁরা টাকা দাবি করেন।

চক্রের প্রধান আজিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, আজিজুল ১৯৯৭ সালে কিশোর বয়সে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় আসেন। শুরুর দিকে তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেন। ২০০৮ সালে তিনি বাসচালকের সহকারীর কাজ নেন। ২০১৫ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জে গিয়ে অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। অটোরিকশা চালাতে গিয়েই তিনি চোর চক্রে জড়িয়ে পড়েন। তখন একটি পিকআপ ভ্যান চুরি করলে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পেতেন। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নতুন চক্র গড়ে তুলে বেশি আয় করবেন। সাত মাস পর কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে তিনি নতুন একটি চক্র গড়ে তোলেন। তাঁর চক্রের অধিকাংশ সদস্যই অটোরিকশাচালক।

অপরাধ