যে মন্ত্রে বিশ্বজয়ের গল্প লিখলো অস্ট্রেলিয়া

যে মন্ত্রে বিশ্বজয়ের গল্প লিখলো অস্ট্রেলিয়া

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ফেভারিটের তালিকায় রেখেছিলেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। কেউ কেউ রাখলেও সেটা অনেকটা না রাখার মতোই। অজিরা সেমিফাইনালে নাম লেখায় ‘ভাগ্যের সহায়তায়’ রানরেটে এগিয়ে থাকায়। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে অন্য অস্ট্রেলিয়াকে দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। টি-টোয়েন্টিতে বিবর্ণ পারফরমেন্স নিয়ে বিশ্বকাপে আসে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম তুমুল সমালোচনা করেছিল। অফ ফর্মে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারকে দলে রাখা নিয়েও সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক ও কোচ। পাহাড়সম চাপ নিয়ে বিশ্বকাপে আসা অ্যারন ফিঞ্চের দল পরেছে

পাঁচবার ওয়ানডে বিশ্কাপ জিতলেও অস্ট্রেলিয়ার আক্ষেপ ছিল কুড়ি ওভারে বিশ্বসেরা হতে না পারার। আগের ছয় আসরের চেয়ে কিছুটা কম শক্তি ও প্রস্তুতি নিয়ে আসা অস্ট্রেলিয়া কোন মন্ত্রে জিতলো বিশ্বকাপ? সেটাই শুনিয়েছেন বিশ্বজয়ী অজি কোচ-ক্রিকেটাররা।

জাস্টিন ল্যাঙ্গার (প্রধান কোচ)
‘বিশ্বকাপ জয়ের পর সবাই সম্ভবত বলে যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কিন্তু এই দলটা, এই ছেলেরা এত স্পেশাল একটা গ্রুপ। আমি জানি, সব কোচ-অধিনায়ক একই কথা বলেন, তবে আমার ছেলেরা অসাধারণ। গত ১২ মাসে নানা কারণে ওরা সবাই একসঙ্গে খেলতে পারেনি। এবার একসঙ্গে হওয়ার পর যেন এটা পুনর্মিলনীর রূপ নিয়েছে। দলে অনেকেই পরস্পরের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ। সবারই জন্যই এটি খুব খুব বিশেষ মুহূর্ত। সবাই সুরক্ষা-বলয়ের মানসিক ধকলের কথা বলে। আমরা এখানে আনন্দটাকে আলিঙ্গন করেছি। মাঠের ভেতরে-বাইরে এই ছেলেরা এত মজা করেছে! ক্রিকেটে উপভোগ করাটা খুব জরুরি। এই ছেলেরা তা করেছে এবং আমাদের সাফল্যের পেছন এটির ভূমিকা অনেক বড়।’

ডেভিড ওয়ার্নার
‘২০১৫ বিশ্বকাপে শিরোপার জয়ের পাশাপাশিই থাকবে এই সাফল্য। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের কাছে ফাইনাল হার ছিল পীড়াদায়ক। এবারের এই ছেলেরা অসাধারণ, দারুণ সব সাপোর্ট স্টাফ এই দলের এবং গোটা বিশ্ব থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি, বিশেষ করে দেশ থেকে।’

অ্যারন ফিঞ্চ
‘অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দল হিসেবে এই শিরোপা জিততে পারা অনেক বড় অর্জন। দলকে নিয়ে দারুণ গর্বিত আমি। (ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর) দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। সেখান থেকে কেবল সামনেই এগোতে পারি। আমাদের লড়াই করতে হতো এবং আমরা তা করেছি।’

মিচেল মার্শ
‘আমি আসলে ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এই দলের সঙ্গে কী অসাধারণ ৬টি সপ্তাহই না কাটল! ওদের জন্য ভালোবাসা আমৃত্যু। আমরা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!’

অ্যাডাম জাম্পা
আমি স্রেফ নিজের শক্তির জায়গাটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছি। আজকে ভালো সময়ে বোলিং করতে পেরেছি। শুরুকে উইকেট বেশ শুষ্ক ছিল। সেটি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। দলের প্রয়োজনের সময় উইকেট এনে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

মিচেল স্টার্ক
‘টুর্নামেন্টের আগের পথচলা আদর্শ ছিল না (কয়েকটি সিরিজ হেরে)। তবে দলটার বন্ধন দুর্দান্ত। এখানে দারুণ সময় কেটেছে আমাদের। মাঠের বাইরে চমৎকার সময় কেটেছে। পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক, মাঠের ক্রিকেটেও সেটা ফুটে উঠেছে। সবাই অবদান রেখেছে মাঠের ভেতরে-বাইরে। একেকদিন একেকজন দলকে জিতিয়েছে। ফাইনালেও যেমন দেখা গেল। এই দলের বন্ধনটাই আমাদেরকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে। আশা করি, এই গ্রীষ্মেও দেবে (অ্যাশেজে)।’

ম্যাথু ওয়েড
‘এটা বিশাল কিছু (শিরোপা)। আমাদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অনেকেই হয়তো আমাদের গোনায় ধরেনি এবং আশা করেনি যে আমরা আজকে এখানে থাকব। তবে নিজেদের মধ্যে আমরা কথা বলেছি যে অস্ট্রেলিয়াকে এই অর্জন এনে দেওয়া প্রথম দল হতে পারি আমরা। সেটি করতে পারা সত্যিই স্পেশাল।’

খেলাধূলা