মানুষ এখন কেবলই মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করে না, টুকটাক পণ্য থেকে শুরু করে দামি পণ্য পর্যন্ত কেনা হচ্ছে অনলাইন থেকে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন শপিং ব্যবস্থা।
- তবে অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকে। দরদামের বালাই নেই, নেই মান। ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ছবির সঙ্গে পণ্যের মিল নেই। ডেলিভারি পেতে বিলম্ব। কার্ড পেমেন্টে টাকা ফেরত পেতে সময় ক্ষেপণ। ডেলিভারি চার্জের নামে অগ্রিম টাকা নিয়ে আইডি ব্লক। এক পণ্যের নাম করে অন্য পণ্য ডেলিভারি। কখনো আবার পরিমাণে কম কিংবা নষ্ট কিংবা পুরোনো পণ্য সরবরাহ।
অনলাইন ব্যবসার নামে এভাবেই নানা কায়দায় ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা চলছে। তাদের নতুন নতুন ফাঁদে প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এরকমই একটি ভুঁইফোড় অনলাইন শপ ‘মরিন বাংলাদেশ’। এই অনলাইন থেকে কেনাকাটা করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
প্রতারণার শিকাররা বলছেন, অনলাইন ব্যবসার জনপ্রিয়তা বাড়লেও এখনো সরাসরি বিপণিবিতান থেকে পণ্য কেনাই ভালো মনে হচ্ছে। এতে দর যাচাই করে পণ্য কেনা যায়। পণ্য দেখে ক্রয় করা যায়।
মরিন বাংলাদেশ অনলাইন থেকে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত ১৩ নভেম্বর এর পেজ থেকে একটি ব্ল্যাক হেয়ার শ্যাম্পু অর্ডার করেন। ১৫ নভেম্বর তিনি পণ্য হাতে পাওয়ার পর দেখেন তার অর্ডারকৃত পণ্যের সঙ্গে ডেলিভারি পণ্যের কোনো মিল নেই, পণ্যটি একেবারেই আলাদা। এরপর সেই ফেসবুক পেজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এটার জন্য ভুল স্বীকার না করে বরং দায়ভার নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে মরিন বাংলাদেশের অফিসিয়াল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে কাস্টমার সার্ভিসের একজন নারীকর্মী বিষয়টা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবেন বলেন জানান। এরপর আবার একই নাম্বারে ফোন করে অরিজিনাল পোডাক্ট দিতে বলা হয়, নাহলে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলা হলে তারা অশোভন আচরণ করেন।
পরবর্তীতে Morin.com.bd এর ওয়েবসাইটের নিচে দেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে আব্দুল মোমিন নামের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়।
অর্ডারকৃত পণ্যর সঙ্গে ডেলিভারির পণ্যর মিল না থাকা ও তাদের কাস্টমার সার্ভিসের অশোভন আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও আক্রমাণত্মক ভাষায় কথা বলেন।
এ প্রতিষ্ঠান ইউকে এর পণ্য বলে ভেজাল পণ্য বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে তারা মিনি প্যাকে শ্যাম্পু হেয়ার কালার বিক্রি করেছে, কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এই কালার নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তারা জানায় এটি কে বা কারা নকল করেছে।
ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে এদের পণ্যের যে প্রদর্শন করা হয় তার সঙ্গে একই ফেসবুক লিংক রয়েছে। কিন্তু এ লিংকে চাপ দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। এভাবে তারা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।
ই-কর্মাস খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যথাযথ তদারকি না থাকায় এমন প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসহ অনলাইন ব্যবসায়ীরা। কারণ একই ব্র্যান্ডের পণ্য একেক সাইটে একেক রকম দাম।
এক পণ্যের অর্ডার নিয়ে অন্য পণ্য গছিয়ে দিচ্ছে মরিন বাংলাদেশ
ভুঁইফোড় এসব অনলাইন সর্ম্পকে পুলিশ বলছে, ফেসবুকে অসংখ্য অনলাইন শপিং পেজ রয়েছে। তারা নানা রকমের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে লোকজনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এরমধ্যে কিছু পেজ আছে সেখানে কখনো কখনো এক ধরনের পণ্য দেখিয়ে অন্য ধরনের পণ্য বা নিম্নমানের প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেছেন, তারা অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।